প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অপরাধীদের রক্ষা করতে চায়। শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে জয় তার ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এ কথা উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, আমি সন্দেহ করছি, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কিছু রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। তারা বাংলাদেশে একটি পুতুল সরকার ক্ষমতায় আনতে চায়। দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। ১/১১ থেকেই একটি ব্যাপার খুব পরিষ্কার যে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আর কোনো মানবাধিকার সংগঠন নয়।
পোস্টে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা দাবি করে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করা হচ্ছে। আমাদের দেশে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। তারা উদাহরণ হিসেবে শফিক রেহমান ও মাহফুজ আনামের কথা উল্লেখ করেছে।
শফিক রেহমান একজন সাবেক মার্কিন এফবিআই এজেন্টের সঙ্গে দেখা করেন উল্লেখ করে জয় তার ফেসবুক টাইমলাইনে আরো উল্লেখ করেন, আমার সম্পর্কে তথ্যের জন্য ওই এজেন্টকে শফিক রেহমান ঘুষ দেন। সাবেক এই এজেন্ট ও তার দুই সহকর্মী এখন যুক্তরাষ্ট্রের জেলে আছেন। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের ওয়েবসাইটে এই সম্পর্কে বিস্তারিত পাওয়া যায়। এমনকি যদি আমরা এই সত্যকে সরিয়ে দেই যে, তার এক সহযোগী মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে স্বীকার করেছেন যে, তিনি আমাকে অপহরণ ও হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন। শফিক রেহমান এফবিআই এজেন্টকে ঘুষ দেয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। শফিক রেহমান যদি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন, তাহলে তিনিও এখন জেলেই থাকতেন।
জয় আরো উল্লেখ করেছেন, মাহফুজ আনাম জাতীয় টেলিভিশনে স্বীকার করেছেন যে, তিনি আমার মা, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে দুর্নীতির মিথ্যা গল্প লিখেছেন। তিনি এও স্বীকার করেছেন, একটি অবৈধ সামরিক সরকার আমাদের দেশে যেন ক্ষমতায় আসতে পারে, সে জন্য তিনি আমার মায়ের বিরুদ্ধে নগ্ন প্রচারণা চালিয়েছিলেন। তবু, আমাদের সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেনি। বিদ্রোহ ও অপবাদের জন্য ন্যায়বিচারের অধিকার থেকেই আমাদের দলের সদস্যরা তার বিরুদ্ধে সিভিল মামলা দায়ের করেন। আওয়ামী লীগের প্রত্যেক সদস্য এই সামরিক একনায়কত্বের সময় ভোগান্তির জন্য মাহফুজ আনামকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছিলেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অপরাধীদের পক্ষে প্রচারণা করছে অভিযোগ করে জয় আরও বলেন, তারা বলে যে নাগরিক হিসেবে আমাদের নিজের সম্মান রক্ষার্থেও সিভিল কোর্টে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকার নেই। ঠিক এই জায়গাতেই আমাদের শক্ত প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।
বিগত ২০০৭-২০০৮ সালের শাসনকালের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, আমরা ভুলিনি, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০০৭-২০০৮ সালে সামরিক একনায়কত্বের বিরুদ্ধে কোনও বিবৃতি দেয়নি। তখন রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা কোনও অভিযোগ ছাড়াই আটক হয়েছিলেন এবং তাদের সম্পত্তি কোনও প্রক্রিয়া ছাড়াই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। তাদের মানবাধিকারও লঙ্ঘন করা হয়েছিল। কিন্তু অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে তখন আমরা নীরব দেখেছি। তারা আজ অপরাধীদের রক্ষা করার কথা বলছে।