উদ্বোধনের অপেক্ষায় দ্বিতীয় তিস্তা সড়কসেতু

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট থেকে.

লালমনিরহাটসহ বৃহত্তর রংপুরের অর্ধকোটিরও বেশি মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন এখন শুধু সময়ের ব্যাপারর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাট জেলা কালেক্টরেট মাঠে অনুষ্ঠিত লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক জনসভায় কাকিনা-মহিপুর দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। প্রায় একশ’ ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত এই সেতুটি রংপুর অঞ্চলের লাখো মানুষের আর্থ-সামাজিক ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও ভাগ্যোন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে। স্বপ্ন পূরণের মধুর ক্ষণ গণনার শেষ মুহূর্তে তিস্তা নদীর পশ্চিম পাড়ের রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার মানুষ এখন আনন্দে উদ্বেলিত। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।
জানা যায়, লালমনিরহাটের কাকিনা ও রংপুরের মহিপুরের মধ্যে সড়কপথে সরাসরি চলাচলের জন্য প্রস্তাবিত দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর মূল কাঠামোর অন্তত ৯৯ ভাগের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বাকি ১ ভাগসহ অন্যান্য টুকিটাকি কাজ শেষ করে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সেতুটি তত্ত্বাবধানকারী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গিয়েছে, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি ও নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা কনস্ট্রকশন লিমিটেডের প্রতিনিধি সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি নিশ্চিত করে। ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্যর্রে এবং ৯ দশমিক ৬০ মিটার প্রস্থের এ সড়ক সেতুর দ’ুপাশে রেলিংসহ ২ দশমিক ৩০ মিটার প্রস্থের ফুটপাত রয়েছে। সেতুটির উত্তর পাশে (কাকিনার দিকে) তিস্তা নদীর বাঁ তীরে ১ হাজার ৩০০ মিটার দীর্ঘ নদীশাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পাকা করা হয়েছে। অপরদিকে সেতুটির দক্ষিণ দিকে (মহিপুর অংশে) পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুরোনো নদীশাসন কার্যক্রমের সিসি ব্লক রয়েছে।
এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু চলাচলের জন্য উদ্বোধন করে দিলে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার মধ্যে চারটি যথাক্রমে আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার মানুষ যেকোনো সময় রাজধানী ঢাকা, বিভাগীয় শহর রংপুরসহ যেকোনো স্থানে অল্প সময়ের মধ্যে যাতায়াত করতে পারবে। এতে তাদের সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে।
লালমনিরহাট এলজিইডি প্রকৌশলী আল-আমিন খাঁন বলেন, সেতুটির মূল অবকাঠামোর প্রায় ৯৯ ভাগ নির্মাণকাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। সেতুটিতে লাইটপোস্ট স্থাপনসহ টুকিটাকি কাজ বাকি আছে। আগামী মাস খানেকের মধ্যে এসব কাজ শেষ হবে। সেতুটির উজানে নদীর মাঝামাঝি বালুর যে নতুন চর দেখা দিয়েছে, তা অপসারণ করা হলে সেতুটির সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। কারণ, এই চর থাকলে নদীর স্বভাবিক পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে দুই পাড়ে আঘাত করলে সেতুটির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
নাভানা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (প্রকৌশল) মকবুল হোসাইন মিয়া বলেন, সেতুটির বাকি ১ ভাগ কাজ শেষ করে জুন মাসের মধ্যে সেতুটি এলজিইডিকে হস্তান্তর করা হবে। তিনি বলেন, এরপর সুবিধাজনক যেকোনো সময়ে এর উদ্বোধন হলে জনগণ চলাচলের দুর্ভোগ থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন,‘ কাকিনা-মহিপুর সড়ক সেতু লালমনিরহাট জেলাবাসীর স্বপ্ন পূরণের মাইল ফলক। এ নবনির্মিত সেতুটি উদ্বোধন করা হলে লালমনিরহাট জেলার মানুষের রাজধানী ঢাকার সাথে ২ ঘণ্টার দূরত্ব কমে যাবে।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ