এবার নিজের ঘরে ঈদ !


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820

Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820

ধুনটে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ি পাচ্ছেন ১৫০ পরিবার

    স্বামীর সঙ্গে নিজের মত করে একটি সংসারের স্বপ্ন দেখতেন মুক্তি রাণী। বসবাসের উপযোগী নিজের একটি বাড়ি। যেখানে স্বপ্নের মত নিজের সংসার সাজিয়ে তুলবেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যে তা জোটেনি। বগুড়ার ধুনট উপজেলা সদরের একটি পরিত্যাক্ত গণশৌচাগার এখন মুক্তির ঠিকানা। বসবাসের উপযোগী করে স্বামী রতন কুমারসহ দুই কন্যাকে নিয়ে সেখানেই সংসার পেতেছেন মুক্তি।

    মুক্তির বাবা দিপ লাল ছিলেন হরিজন। তিনিও ছিলেন এক টুকরো সরকারি জয়গায় আশ্রিত। সেই ঘরেই জন্মে নেন মুক্তি। বেড়ে ওঠার সাথে সাথে মুক্তি যখন বিয়ে-সংসার সম্পর্কে জেনেছিলেন, তখন থেকেই নিজের সংসারের স্বপ্ন দেখতেন। বিয়ে হয় হরিজন রতন কুমারের সঙ্গে। এরপর নিজের সংসার গড়ে তোলেন পরিত্যক্ত ওই শৌচাগারে।

    ধুনট উপজেলার এক দরিদ্র বাবা-মায়ের আদরের সন্তান রঞ্জু। বেড়ে ওঠার সাথে সাথে যখন বুঝতে পারেন সে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। তখন পরিবারের আদর-যতœ কমতে থাকে। শুরু হয় সামাজিক হয়রানী। বাধ্য হয়ে ঘর ছাড়েন রঞ্জু। বদলে যায় তার জীবন-জীবিকা। রঞ্জু এখন ‘হিজড়া কিরণ’ নামে পরিচিত। ১৫ বছর ধরে ঘর ছাড়া কিরণ এখন সমাজের ভাসমান এক মানুষ।

    শুধু মুক্তি রাণী বা হিজড়া কিরণ নয়, হরিজন ও তৃতীয় লিঙ্গের অধিকাংশ মানুষের গল্পটা এমনই। তবে তৃতীয় লিঙ্গের ১৬জন ও ৮টি হরিজন পরিবারের গল্পটা এবার বদলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারাসহ মোট ১৫০টি পরিবার পাচ্ছে আপন ঠিকানা। মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ- ২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে দুই শতক জমিসহ আধাপাকা নতুন ঘর উপহার পাচ্ছেন তারা। ২৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) জমির দলিলসহ বাড়ি গুলো হস্তান্তর করা হবে তাদের মাঝে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়ে তাঁদের ঈদ আনন্দে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা।

    ধুনট উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ- ২ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ১০১টি এবং ২য় পর্যায়ে ১২০টি ভ‚মিহীন ও গৃহহীন পরিবার জমিসহ আধাপাকা ঘর উপহার পেয়েছেন। ৩য় পর্যায়ে ১৫০টি ঘর বরাদ্দ হয়। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ছিলো ২লাখ ৫৯হাজার ৫০০টাকা। ধুনট সদর ইউনিয়নের মালোপাড়ায় ৫৩টি, নিমগাছী ইউনিয়নের বড়ইতলী ৮টি, গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের চুনিয়াপাড়ায় ৪৩টি, নাটাবাড়ীতে ১৬টি, ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের শিমুলবাড়ীতে ১৩টি ও চিকাশী ইউনিয়নের সোনারগাঁয়ে ১৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সুবিধাভোগীদের নামে জমির দলিল রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক ভাবে জমির দলিল হস্তান্তর করার পরই ধুনটের ১৫০টি পরিবারের মাঝে দলিল ও বাড়ি বুঝিয়ে দেয়া হবে।

    প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মুক্তি রাণী বলেন, শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এবার মেয়েদের শিক্ষিত করে সামাজিক ভাবে বাঁচার চেষ্টা করবো। তৃতীয় লিঙ্গের কিরণ বলেন, এক সমাজ আমাকে ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছিল। ভাসমান জীবনকে নিয়ে এবার নতুন সমাজে বাঁচবো। তবে তারা এমন উপহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

    ধুনট উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত ধুনট বার্তাকে বলেন, ইতিমধ্যে ১৫০টি ঘর হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘর হস্তান্তরের পরই আমরা ঘর গুলো গৃহহীনদের বুঝিয়ে দেবো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধুনট উপজেলায় প্রথম ও ২য় পর্যায়ে নির্মিত ঘর গুলো ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশংসিত হয়েছে। এবারও মানসম্মত ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ঘর গুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। আশ্রয়ণ পল্লী গুলোতে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।    

      ধুনটের গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের চুনিয়াপাড়া আশ্রয়কেন্দ্র।

      অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ