Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি.
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। এতে গত দুই দিনে বন্যার পানিতে ডুবে ও সাপের কামড়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন নয় উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের ৭৬৩ গ্রামের প্রায় চার লক্ষাধিক মানুষ।
মৃতরা হলেন- উলিপুরের নাজমুল ইসলাম (৭), আজাহার আলী (৭০), নাগেশ্বরীর আব্দুল করিম ওরফে মনসুর (১৪), ফুলবানু (৩১), ভুরুঙ্গামারীর মজিবর রহমান (১৫)। এ নিয়ে গত তিন দিনে কুড়িগ্রামে বন্যায় ১৫ জনের মৃত্যু হল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ১০১ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার, নুন খাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির প্রবল স্রোতে ভেসে গেছে প্রায় দুই শতাধিক ঘর-বাড়ি। অনেক পরিবার এক কাপড়ে অবস্থান করছেন নিরাপদ আশ্রয়ে।
কুড়িগ্রামের টগরাইহাট এলাকায় বন্যার পানিতে রেল সেতুর গার্ডার দেবে যাওয়ায় সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়ক তলিয়ে চারটি পয়েন্টে ধস নামায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সোনাহাট স্থল বন্দরসহ নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সাড়ে পাঁচ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠন। তলিয়ে গেছে ৫০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমনখেত।
সদর উপজেলার কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়কের ধরলা ব্রিজ এলাকায় ৯ দিনের শিশুকে নিয়ে এক কাপড়ে পলিথিনের তাঁবুর নিচে অবস্থান করা বিজলী বেগম জানান, বাড়িতে পানি ওঠে সবকিছুই নিমজ্জিত হয়েছে। কোনো কাপড়-চোপড় আনতে পারেননি। ৯ দিনের বাচ্চাকে নিয়ে সড়কে উঠেছেন। কোনো খাবারও পাচ্ছেন না।
সদরের কাঠালবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেদওয়ানুল হক দুলাল বলেন, ধরলার এমন বন্যা আমার জীবনে দেখিনি। কাঠালবাড়িসহ পার্শ্ববর্তী সব ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বানভাসি মানুষের পাশে দ্রুত সরকারি সহায়তা কামনা করছি।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন মঞ্জু বলেন, সদর উপজেলার ৯০ ভাগ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। আমরা সাধ্যমত চেয়ারম্যান মেম্বারদের মাধ্যমে আশ্রয় নেয়া মানুষদের খাবারের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। যাতে করে কেউ না খেয়ে না থাকে।
কুড়িগ্রাম ৪৫ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল আউয়াল উদ্দিন আহমেদ বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিদিন ১৫০ প্যাকেট করে প্যাকেজ ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছেন। ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান বিজিবির এই পরিচালক।
তবে স্বল্প পরিসরে ত্রাণ তৎপরতা চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে দাবি বন্যার্তদের। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য সাড়ে ১৭ লাখ পাঁচ হাজার টাকা, ৬৫১ মেট্রিক টন চাল ও দুই হাজার শুকনো খাবার প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।