Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি.
টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
প্লাবিত হয়ে পড়েছে নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর ও উলিপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৫০ ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কুমরপুর এলাকায় কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়ক তলিয়ে যাওয়া যেকোনো মুহুর্তে জেলা শহরের সাথে নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এছাড়াও গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। তলিয়ে গেছে এসব এলাকার গ্রামীণ হাট-বাজার গুলো। তলিয়ে গেছে জেলার ৫০ ইউনিয়নের রোপা আমনসহ মৌসুমী ফসল।
বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মানুষজন ঘর-বাড়ি ছেড়ে বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পাকা সড়কে আশ্রয় নিচ্ছে।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কুমরপুর এলাকার নছিয়ত আলী (৭০) বলেন, শুক্রবার রাত থেকে ধরলার প্রানি প্রবল বেগে বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ি-ঘর তলিয়ে গেছে। বাড়িতে থাকতে না পেরে ছেলে-মেয়ে, গরু ছাগলসহ মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছি। সে মাদ্রাসার মাঠও তলিয়ে গেছে। যে হারে পানি বাড়ছে তাতে মনে হয় এখানেও আর থাকা যাবে না।
একই এলাকার মঞ্জুরী বেগম বলেন, বাড়িতে এক বুক পানি। সকাল থেকে চৌকি উচু করে ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসে ছিলাম। এখন আর থাকা যাচ্ছে না। এজন্য নৌকায় করে ছেলে-মেয়ে ছাগল ভেড়া নিয়ে বাপের বাড়িতে যাচ্ছি।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াৎ মো. রহমতুল্ল্যা জানান, নাগেশ্বরী পৌরসভার একাংশসহ ১০টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহম্মদ ফেরদৌস খান জানান, শক্রবার থেকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় মাঠ পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানকে পানিবন্দি মানুষজনের পাশে দাড়াতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। যেখানে যা প্রয়োজন তা দেয়া হবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদ জানান, জেলায় ২৫টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার রায় চৌধুরী জানান, জেলায় ৪৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠায় তা বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ৫৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৫৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে তিস্তাসহ অন্যান্য নদীর পানিও।