গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে গৃহবধুকে নির্যাতন

নিউজ ডেস্ক.

যৌতুকের দিতে অস্বীকার করায় সেলিনা বেগম (২২) নামের এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে ও লোহার খুন্তি গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করেছে পাষন্ড স্বামী। জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার পানাতিয়াপাড়া গ্রামে বর্বরোচিত এই নারী নির্যাতনের ঘটনাটি ঘছে। গুরুত্ব আহত অবস্থায় ওই গৃহবধুকে শুক্রবার বকশীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের মাদারেরচর ঘুগরাকান্দি গ্রামের আবদুল খারেকের মেয়ে সেলিনাকে বিয়ে একই উপজেলার বাট্টাজোড় এলাকার পানাতিয়াপাড়া গ্রামে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ দেয় স্বামী রফিকুল।
গৃহবধুর স্বজনরা জানিয়েছে, দেড় বছর আগে সেলিনার সঙ্গে রফিকুলের বিয়ে হয়। বিয়ের প্রথম কয়েক মাস পরেই রফিকুল চার লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের জন্য সেলিনার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়। কিন্তু দরিদ্র কৃষক বাবা আবদুল খালেকের পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না। এ নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিস বৈঠকও হয়। তিন মাস আগে তাঁর বাবা বাধ্য হয়ে জমি বিক্রি করে দুই লাখ টাকা জামাতা রফিকুলের হাতে তুলে দেন। গত মাসে সেলিনাকে রফিকুল কর্মস্থল গাজীপুরের টঙ্গী বোর্ড বাজার এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে আরও দুই লাখ টাকার জন্য শুরু করেন পাশবিক নির্যাতন।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই টাকার জন্য প্রথম তাঁদের মধ্যে ঝগড়া বাধে। ঝগড়ার একপর্যায়ে রফিকুল সেলিনার মুখ ও হাত-পা বেঁধে লোহার রড দিয়ে পেটান। এতেও তিনি ক্ষান্ত হননি। লোহার একটি খুন্তি গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে সেলিনা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর তাঁকে ঘরে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে রফিকুল চলে যান। ওই বাড়ির মালিক বিষয়টি বুঝতে পেরে তালা ভেঙে তাঁর গ্রামের বাড়িতে খবর দেন। পরিবারের লোকজন শুক্রবার সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেলিনা সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বকশীগঞ্জ থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, ‘ওই গৃহবধূকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। সারা শরীরের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল গাজীপুর হওয়ার কারণে মামলা ওই থানায় মামলা করতে হবে। দরিদ্র পরিবারটিকে মামলা দায়েরের সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ