জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ওস্তাদ মিহির নন্দী

বিনোদন ডেস্ক.

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম কণ্ঠ সৈনিক ওস্তাদ মিহির নন্দী জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সঙ্গীতের এই অনন্য সাধকের সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে আশীর্বাদ চেয়েছেন তার পরিবারের সদস্য স্বজনরা। গত বেশ কিছু দিন ধরেই দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রতিথযশা সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ মিহির নন্দী। চিকিৎসক জানিয়েছেন, ওস্তাদ মিহির নন্দীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হবার সুযোগ খুব কম।
মিহির নন্দী উপমহাদেশের বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। ‘সুরে গুরু দাওগো সুরের দীক্ষা’, ‘তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী’ ‘আকাশ জুড়ে শুনিল ঐ বাজে’ ‘ওহে সুন্দর মম’-এমন সব গানের অনন্য সুরের স্রষ্টা ওস্তাদ মিহির নন্দী।
শুদ্ধসুরের এই সাধক একাত্তরে যুদ্ধের ভয়াবহ দিনগুলোতে গানে কণ্ঠে তুলেছেন উদ্দীপনামূলক সুর। ঘুরেছেন ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলোাতে। বাংলার স্বাধীনতাকামী মানুষ ও মুক্তি সংগ্রামীদের করেছেন উজ্জীবিত।
ওস্তাদ মিহির নন্দী তার বর্ণাঢ্য সঙ্গীত সাধনায় চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করেছেন নানাভাবে। দেশের প্রতিটি প্রান্তে রবীন্দ্র সঙ্গীতে আলোর ধারায়, সুরের ধারায় উচ্ছসিত রেখেছেন। বরেণ্য এই সঙ্গীতজ্ঞকে নিজেদের মাঝে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেতে চান তার শিক্ষার্থী ও অনুসারীরা।
ওস্তাদ মিহির নন্দী ১৯৬৪ সালে চট্টগ্রাম বেতারে তালিকভুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত ও রবীন্দ্র সঙ্গীতে শিক্ষকতা শুরু করেন ১৯৬৪ সালে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক ও বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিশেষ শ্রেণির শিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার ও বিচারকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য।
রবীন্দ্র সঙ্গীত মিহির নন্দীর ধ্যান জ্ঞান হলেও আধুনিক, নজরুল ও অতুল প্রসাদ ছাড়াও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে বিশেষ দক্ষতা রয়েছে তার। বর্তমানে তিনি আনন্দধ্বনীর অধ্যক্ষ, রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের সহ-সভাপতি।
১৯৪৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কেউচিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন সুরশ্রষ্টা ওস্তাদ মিহির নন্দী। পিতা ফনীন্দ্র লাল নন্দী। মাতা মল্লিকা রানী নন্দী। লেখাপড়ায় হাতেখড়ি বাজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলে পড়েছেন মাধ্যমিক। এরপর চট্টগ্রাম সিটি কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। চাকরি জীবনে তিনি বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ