ঝিনাইদহে বিএনপির সভায় দুই পক্ষের মারামারি

নিউজ ডেস্ক.

ঝিনাইদহে বিএনপির নতুন কমিটির প্রতিনিধি সভায় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও তুমুল সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ফেনীর সাবেক সাংসদ জয়নাল আবেদিনের (ভিপি জয়নাল) উপস্থিতিতে বুধবার সকালে শহরের পৌর কমিউনিটি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সংঘর্ষ চলাকালে কমিউনিটি সেন্টারে ব্যাপক ভাঙচুর হয়। জেলা বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমান ও দলের কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদেরর দ্বন্দ্বের জের ধরে এ সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১১টার দিকে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভা শুরু হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন (ভিপি জয়নাল)। এ ছাড়া সভায় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত হাসান, জয়ন্ত কুমার কুমার কুণ্ডু, সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মনির খান, ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের সাবেক এমপি বিএনপি নেতা আব্দুল ওহাব, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক এমপি শহিদুজ্জামান বেল্টু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মসিউর রহমানের স্বাগত বক্তব্যের পর প্রধান অতিথি সূচনা বক্তব্য শেষ করেন। এর পরপরই শৈলকুপা থেকে আসা আসাদ সর্মথকরা সভাস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করে। মসিউর রহমানের সমর্থকরা মূল ফটকে তাদেরকে বাধা দেয়। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে আসাদ সমর্থকরা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে তারা হট্টগোল শুরু করে। একপর্যায়ে তারা কমিউনিটি সেন্টারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। ইটপাটকেল ছুড়ে কমিউনিটি সেন্টারের জানালার কাচ ও চেয়ার ভাঙচুর করে আসাদ সমর্থকরা। এরপর মসিউর সমর্থকরাও পাল্টা হামলা করে। এরপর মসিউর রহমান ও আসাদ সমর্থকদের মধ্যে বাইরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে সভাস্থলে এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিপক্ষে স্লোগানও দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কোন দিক নির্দেশনামূলক বক্তৃতা দিতে পারেননি। ১২ টার দিকে হৈ হট্ট্রগোলের মধ্যদিয়ে বিএনপির প্রতিনিধি সভা শেষ করে নেতৃবৃন্দ সভামঞ্চ ত্যাগ করেন।
পরিস্থিতি শান্ত রাখতে শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে সদর থানার ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার জানান। তিনি বলেন, সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল সাংবাদিকদের বলেন, যারা এ হামলা চালিয়েছে, তারা বিএনপির কেউ নয়। আওয়ামী লীগের ইন্ধনে এই হামলা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট আসাদ বা জেলা সভাপতি মসিউরের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা জানান, গত জানুয়ারির শেষ দিকে জেলা বিএনপির ১৫১ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকে সভাপতি মসিউর রহমানের সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদের দ্বন্দ্বের খবর আসছিল। এর মধ্যে গত ২৭ এপ্রিল আসাদের অনুসারী শৈলকুপার ১৭ জন নেতাকে  জেলা বিএনপিতে অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে। নতুন অর্ন্তভূক্ত ওই ১৭ নেতাকে প্রতিনিধি সভায় দাওয়াত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আসাদ সমর্থকদের। এ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়।
এর আগে মঙ্গলবার দুই পক্ষের হট্টগোল আর চেয়ার ছোড়াছুড়ির কারণে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কর্মীসভা পণ্ড হয়ে যায়।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ