ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধেই হাট !


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820

Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820

আবদুল জলিল, কাজীপুর.



    কাজীপুর উপজেলার একটি ইউনিয়নের নাম মাইজবাড়ী। ১৪ টি গ্রাম নিয়ে নিয়ে ৬নং মাইজবাড়ী এই ইউনিয়ন গঠিত। সিরাজগঞ্জের উত্তরের সীমানা ঘেঁষা এই এই ইউনিয়নটির যাত্রা শুরু হয়েছে ১৯৩০ সাল থেকে।
    উত্তরের সোনাতলা উপজেলা থেকে সারিয়াকান্দি হয়ে ধুনট উপজেলার দক্ষিণের শেষ এই ইউনিয়ন পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার ব্রহ্মপুত্র বন্যানিয়ন্ত্রণ ((বিআরই) বাঁধের অবস্থান। আর এ বাঁধের সর্বশেষ প্রান্তে একটি অতি প্রাচীন হাট অবস্থিত। যার নাম ঢেকুরিয়া হাট। বর্তমানে এ হাটটি বন্যার পানির নিচে অবস্থান করছে।
    প্রায় ২১৭ টি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ৩ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৪ টি মসজিদ হাটের সীমানায় অবস্থিত। মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে যমুনার পানি ঢুকে এই হাটটি তলিয়ে যায়। হাটের ভেতর কোথায় কোমরা আবার কোথাও বা বুক পানি বিরাজ করছে।
    এদিকে হাটের এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের মধ্যে অনেকেই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের একটি অংশজুড়ে হাট বসিয়েছেন। এতে বাঁধের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। ঝুঁকি বেড়েছে বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলোরও। কিন্তু উপায় অন্ত না পেয়ে ছোট-মাঝারি সারির বানভাসি দোকানিরা এই হাট লাগিয়েছেন। বেঁচে থাকার তাগিদে এর কোন বিকল্প ছিলো না বলে মন্তব্য তাদের।
    সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁধের একটা বড় অংশজুড়ে দু’পাশ দিয়ে লম্বাভাবে দোকান ঘর গড়ে তোলা হয়েছে। বাঁশের খুটি দিয়ে একযোগো বা পৃথকভাবে ঘরের ফ্রেম বানিয়ে টিন বা পলিথিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে।
    এছাড়াও এসব ঘর তৈরীতে আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র ব্যবহার করা হয়েছে। আর পণ্য রাখার জন্য কাঠের চকি ব্যবহার করছেন অনেকে। কেউ কেউ টেবিল আবার অনেকেই মাটিতে বস্তা অথবা পাটের চট বিছিয়ে রকমারি পণ্য রেখে দিয়েছেন।
    এসব দোকানে মানুষের খাবার থেকে শুরু করে মাছ, হাঁস, মুরগী ও গবাদি পশুর খাবার পাওয়া যাচ্ছে। পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের কাঁচা তরি তরকারি ও মাছ-মাংস। মানুষের ওষুধপত্র ও বিভিন্ন ইলেকট্রিক সামগ্রী এসব দোকানে সীমিত আকারে হলেও পাওয়া যাচ্ছে।
    তবে বেচাবিক্রি হওয়ার কারণে দিনদিন পণ্য কমে যাচ্ছে। কিন্তু এসব দোকানিরা নতুন করে আরমাল তোলার সাহস পাচ্ছে না। কারণ এমনিতেই তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। যা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে।
    আব্দুল লতিফ, আব্দুর রাজ্জাক, রাজু মুন্সী, অখিল চন্দ্র, পরিতোষ বাংলানিউজকে জানান, বাবা-দাদার আমল থেকেই এ হাটের কথা শুনে আসছেন তারা। জন্মগতভাবে তারাও নিজেদের ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলেন। কিন্তু এবারের বন্যা তাদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। এক রাতেই সবকিছু কেড়ে নিয়েছে হিংস্র যমুনা।


      এসব ব্যবসায়ীরা জানান, বিগত বছরগুলোতেও বন্যা হয়েছে। তবে এভাবে এক রাতে হাট তলিয়ে যায়নি। আচমকা হাটে পানি ঢুকে পড়ায় সিংহভাগ ব্যবসায়ী কোন কিছু বের করতে পারেননি। এতে তাদের প্রচন্ড ক্ষতি হয়েছে। এখন তারা বেঁচে থাকার লড়াই করছেন। সে হিসেবে যার যা আছে তাই নিয়ে বাঁধে দোকান বসিয়েছেন।
      মাইজবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, এ ইউনিয়নে বিলচতল গ্রামে ৪৪০ টি পরিবার, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, ঢেকুরিয়া গ্রামে ৪৪০ টি পরিবার, ভাঙারছেউ গ্রামে ৩১৫ টি পরিবার, পোড়াবাড়ি ১০৫ টি পরিবার, মাইজবাড়ী গ্রামে ৪৭৫ টি পরিবার ও নতুন মাইজবাড়ী গ্রামে ৩৭৫ টি পরিবার রয়েছে।
      বন্যার কারণে ইতোমধ্যেই এসব পরিবার বাড়ি ছাড়া হয়েছে। এসব পরিবারের বেশির ভাগ মানুষ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতন জূবন যাপন করছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

      অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ