তিস্তার পানি বিপদসীমার উপরে


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820

     


    উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের বর্ষণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে শুকিয়ে যাওয়া তিস্তা আবারো ফিরে পেল চিরচেনা রূপ। বাঁধ ভেঙে শহরে পানি প্রবেশ করছে। তলিয়ে যেতে শুরু করেছে বাড়ি-ঘরসহ আবাদী জমি।

    মঙ্গলবার রাত ১২টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটর। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০সে.মি) বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

    এর আগে গত সপ্তাহ জুড়ে বিপদসীমার ৩৫-৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সোমবার রাত থেকে হঠাৎ বাড়তে থাকে তিস্তার পানি প্রবাহ। যা ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

    স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শুকিয়ে যাওয়া মৃত প্রায় তিস্তা আবারো ফুলে ফেঁপে উঠে ফিরে পেয়েছে তার চিরচেনা রূপ। হেঁটে পাড়ি দেয়া তিস্তায় চলতে শুরু করেছে নৌকা। কর্মব্যস্ততা দেখা দিয়েছে তিস্তাপাড়ের জেলে পরিবারের মাঝেও।

    এ দিকে হঠাৎ তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি দেখে লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের মানুষ বন্যার আশংকা করলেও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি তিস্তায় নতুন করে বন্যার আশংকা নেই। বৃষ্টির কারণে উজানের ঢেউ ও এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের ফলে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেলেও বন্যার আশংকা নেই। বৃষ্টি কমে গেলেই তিস্তার পানি প্রবাহ কমতে শুরু করবে।

    তবে হঠাৎ তিস্তায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধ ভেঙে হাতীবান্ধা উপজেলা শহরে পানি প্রবেশ করছে। ফলে এখনই রাস্তা-ঘাট, বাসা-বাড়ি সব তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। চরাঞ্চলের সবজি চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করা কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সবজি চাষিরা সব থেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাদের সবজি ক্ষেত ডুবে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে।

    আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন পাসাইটারী তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষক মানিক মিয়া জানান, নদীর কিনারে জেগে উঠা ৩ দোন (২৭ শতাংশে দোন) জমিতে আগাম জাতের আমন ধান রোপন করেন। সেই আমন ক্ষেতে কিছু অংশ নদী ভাঙনে বিলিন হলেও বাকি অংশ পানিতে ডুবে আছে। দ্রুত পানি নেমে গেলে ধান ক্ষেতের উপকার হবে। কিন্তু বেশি সময় ডুবে থাকলে ধানক্ষেত পচে নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ কারণেই তিস্তাপাড়ের কৃষকরা আতঙ্কিত।

    হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউপির চর হলদিবাড়ি গ্রামের আব্দুর রহমান ও আনেচ আলী জানান, তিস্তা শুকিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের জমিতে তামাকসহ বিভিন্ন সবজি চাষের জন্য জমি তৈরি করে রেখেছেন তারা। কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে তারা সবজি বীজ বপন করেননি। এরই মধ্যে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জমি ডুবে গেছে। তাই তাদের ব্যস্ততাও কমে গেছে। পানি নেমে গেলে আবারো জমি কর্ষণ দিয়ে সবজি বীজ বপন করা হবে।

    দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ সোমবার রাত থেকে বাড়তে থাকে। মঙ্গলবার রাত ১২টায় বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের সবগুলো জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে। তবে রাতে আবারো পানি প্রবাহ বাড়তে পারে।


    ডেইলি বাংলাদেশ অনলাইন থেকে খবরটি নেওয়া হয়েছে। যার মূল লিংক দেখতে এখানে ক্লিক করুন

    অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ