Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
আমিনুল ইসলাম শ্রাবণ.
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় খালের নামে যেন কৃষকের হৃদয় খনন করছে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। এ খালে গড়ছে কৃষকের চোখের পানি। অথচ খাল খনন বন্ধে অসহায় কৃষকের আবেদন রয়েছে উপজেলা প্রশাসনের ফাইলে বন্দি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নান্দিয়ারপাড়া থেকে বথুয়াবাড়ী পর্যন্ত তিন দশক আগে প্রায় ৩০ কিলোমিটার একটি খাল খনন করা হয়। এলাকা ভিত্তিক খালটির বিভিন্ন নাম রয়েছে। উপজেলার রাঙ্গামাটি ও হাঁসাপোটল গ্রামের মধ্যদিয়ে খালটির অংশ বিশেষ রয়েছে। সর্বশেষ ১৯৮৮ সালে ওই খালে বন্যার পানি গড়েছে। এরপর থেকে খালটি বছরের পুরো সময় শুস্ক থাকে। বৃষ্টির পানি গড়ে যাওয়া ব্যতিত খালটি অন্যকোন কাজে আসেনি। যার কারনে খালের মধ্যে থাকা নিজস্ব জমিতে দীর্ঘদিন যাবত কৃষক বীজতলা তৈরী, ধান ও সবজি চাষ করে আসছিল। এছাড়া খালের পশ্চিম তীরে হাঁসাপোটল ও রাঙ্গামাটি গ্রামের মানুষ বসবাস করেন। পূর্ব তীরে রয়েছে ফসলের বিস্তৃত মাঠ। পশ্চিম তীর থেকে চাষাবাদের জন্য পাওয়ার টিলার ও অন্যান্য উপকরণ নিয়ে যান কৃষক। আবার ফসল নিয়ে পশ্চিম তীরে গোলায় আনতে হয়। গভীরতা স্বল্প হওয়ায় এ চলাচলে খালটি কোন প্রতিবন্ধকতা সৃৃষ্টি করে না। গত ১ জুন থেকে রাঙ্গামাটি গ্রামে এ খাল খনন শুরু করে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। গ্রামবাসীর বাঁধার মুখে রাঙ্গামাটি ছেড়ে হাঁসাপোটল গ্রামে খাল খনন কাজ শুরু করা হয়। এদিকে খাল খনন বন্ধে রাঙ্গামাটি গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে খাস খাল পুনঃ খনন প্রকল্পের আওতায় খালটি খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার এলাকায় খনন কাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। এ কাজের তদারকি করছেন উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুকতাদির।মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, হাঁসাপোটল গ্রামে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে খাল খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পুরানো খাল কেটে দু’পাশে অংশ বৃদ্ধি করেছে। এছাড়া দু’পাশে প্রায় ৬ ফিট করে কৃষকের জমি দখল করে খালের পাড় বাঁধা হয়েছে। এদিকে দু’কিলোমিটার খাল খনন এবং পাড় তৈরীর জন্য কৃষকের প্রায় ৫ শতাধিক বিভিন্ন জাতের গাছ কেটেছে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। এদিকে কে বা কারা কেন খাল খনন করছেন, এ প্রসঙ্গে গ্রামবাসী কিছু জানেন না। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সরকারি কাজ হওয়ায় খনন কাজে বাঁধা দিতে নিষেধ করেছেন গ্রামবাসীকে। এ কারনে অসহায় কৃষকরা খনন কাজে বাঁধা দিতে পারছে না, বরং নিরবে চোখের পানি ফেলছেন।
হাঁসাপোটল গ্রামের কৃষক বদিউজ্জামান ও তাঁর ভাইদের দু’বিঘা জমিয়ে রয়েছে ওই খালে। গত শনিবার তাদের জমিটি খনন করা হয়েছে। বদিউজ্জামান ধুনট বার্তাকে বলেন, তাঁর জমিটি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এখানে আর ফসল চাষ করা সম্ভব নয়।
কৃষক আজিজার রহমান খোকা ধুনট বার্তাকে বলেন, এখানে খাল খননে কৃষকের কোন মঙ্গল হবে না। অথচ খাল খনন করা হচ্ছে। সরকারি কাজের জন্য অসহায় কৃষক শুধু নিরবে চোখের পানি ফেলছে। তিনি বলেন, বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ কৃষকের হৃদয়ে আঘাত দিয়ে খাল তৈরী করছে। ওই খাল দিয়ে এখন কৃষকের চোখের পানি গড়বে। খাল খনন কাজটি বন্ধের জন্য তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।
খাল খনন কাজে নিয়োজিত মেশিনের চালক মমিন খাঁন জানান, এ পর্যন্ত ১০০০ মিটার খাল খনন করা হয়েছে। তবে কত মিটার পর্যন্ত খনন করা হবে, এ ব্যাপারে সে অবগত নয়। এক প্রশ্নের জবাবে মমিন খাঁন বলেন, পাবনার জনৈক সৈকত ইসলাম নামের একজন ঠিকাদারের প্রতিনিধি হিসেবে সে খনন কাজ করছে।
বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুকতাদির ধুনট বার্তাকে জানান, বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ধুনটের রাঙ্গামাটি ও হাঁসাপোটল এলাকায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার খাল খনন কাজ শুরু করেছে। প্রকল্প খাস খাল খনন হলেও, কাজ শুরু হওয়া খালটি খাস কিনা, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কৃষকের ক্ষতির বিষয়টি তার নজরে আসেনি। তবে প্রকল্পটি বন্ধ করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা ধুনট বার্তাকে জানান, বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের খাল খনন প্রকল্পের বিষয়ে তিনি অবগত নন। তাছাড়া খাল খনন বন্ধে কৃষকের আবেদনপত্র তার দৃষ্টি গোচর হয়নি। তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে বগুড়া- ৫ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান ধুনট বার্তাকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষক ও সাধারণ মানুষের কল্যানে কাজ করছেন। কাজেই বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের খাল খনন প্রকল্পে কৃষক উপকৃত না হয়ে যদি ক্ষতিগ্রস্থ হোন, তবে এ প্রকল্প বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।