ধুনটে নারী গার্মেন্স কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা : আটক ২


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820

    বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ঝলকি খাতুন (৩৬) নামে পোশাক কারখানার (গার্মেন্স) এক নারী কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার করেছে যুবদল নেতা ও তার লোকজন। নিহত ঝলকি উপজেলার গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম গুয়াডহরী গ্রামের ভ্যান চালক জিল্লুর রহমান মোহনের স্ত্রী। একই ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীসহ উভয় পক্ষের ৮জন আহত হয়েছে।  

    রোববার রাত ৯টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঝিলকি খাতুন নিহত হয়। এরআগে রোববার দুপুরের দিকে ঝিলকি খাতুন সহ তার পরিবারের ৪জনকে নিজ বাড়িতে পিটিয়ে আহত করে যুবদল নেতা ও তার লোকজন।  

    থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার জামগড় এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় প্রায় ১৮ বছর ধরে চাকুরী করেন ঝিলকি খাতুন। তার স্বামী জিল্লুর রহমান তার প্রতিবন্ধী ছেলে মিলন রহমানকে নিয়ে বাড়ি থেকে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। ঝলকি খাতুন ছুটি নিয়ে রোববার দুপুরের দিকে ঢাকা কর্মস্থল থেকে থেকে স্বামীর বাড়িতে আসে।

    এদিকে একই গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে গোসাইবাড়ি ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক রুহুল আমীন রতনের সমাজভুক্ত জিল্লুর ও তার পরিবারের লোকজন। প্রায় তিন মাস আগে জিল্লুর রহমান প্রতিবেশী এক বিধবাকে যৌন নির্যাতন করে। ওই বিধবা এ ঘটনায় যুবদল নেতা রুহুল আমিন রতনের কাছে বিচার প্রার্থী হয়। ফলে জিল্লুর রহমান ও তার পরিবারকে সমাজচ্যুত করে ওই যুবদল নেতা। এতে রুহুল আমিনের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে জিল্লুর ও তার পরিবার।

    এ অবস্থায় রোববার দুপুরের দিকে বাড়ির সীমনা নিয়ে প্রতিবেশীর সাথে বিরোধ মিমাংসার জন্য জিল্লুর রহমানের বাড়িতে যুবদল নেতা রুহুল আমিন রতনের নেতৃত্বে বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে কথা কাটাকাটির জের ধরে যুবদল নেতা রুহুল আমিন রতনকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে ওই যুবদল নেতার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে জিল্লুর রহমান, তার স্ত্রী ঝলকি খাতুন, ছেলে মিলন রহমান ও ছোট ভাই মিজানুর রহমানকে আহত করে। এছাড়া তারা হামলা চালিয়ে জিল্লুর রহমানের বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। একই সময় জিল্লুর রহমান ও তার লোকজনের লাঠি ও ছুরির আঘাতে যুবদল নেতা রুহুল আমীন রতন, তার স্ত্রী নাছিমা খাতুন ও প্রতিবেশী লিটন ও সোহেল রানা আহত হয়। আহতদের ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে জিল্লুর রহমান, ঝিলকি খাতুন, মিলন রহমান ও মিজানুর রহমানের অবস্থার অবণতি হলে তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরমধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাত ৯টার দিকে ঝিলকি খাতুন মারা যায়। এ সংবাদ পাওয়ার পর থানা পুলিশ যুবদল নেতা রুহুল আমিন রতন ও প্রতিবেশী লিটন মিয়াকে আটক করে। বর্তমানে তারা পুলিশ পাহারায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

    এ বিষয়ে যুবদল নেতা রুহুল আমিন রতন বলেন, প্রতিবেশী এক নারীকে যৌন নির্যাতন করায় জিল্লুর রহমান মোহনকে সমাজচ্যুত করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে জিল্লুর আমার পেটে ছুরি মেরে আহত করেছে। এ খবর পেয়ে গ্রামবাসি জিল্লুর রহমান ও তার পরিবারের লোকজনকে মারপিট করেছে। এরমধ্যে ঝিলকি মারা গেছে। তবে ঝিলকি খাতুনকে আমি কোন প্রকার মারপিট করিনি।      

    ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরমধ্যে ঝিলকি খাতুন নামে একজন মারা গেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ জনকে আটক করা হয়েছে। আইণী প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মৃতদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

    অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ