আমিনুল ইসলাম শ্রাবণ.

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা, বাঙ্গালী ও ইছামতি নদীর পানিতে ৭৪টি গ্রামের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে ১২হাজার কৃষকের ক্ষতি সাধন হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২য় দফা বন্যার পানিতে যমুনা নদী ফুঁসে ওঠে। ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্বতীরের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। যমুনা নদীর পানি বিপদ সীমার ১২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এবছর রেকর্ড সৃষ্টি করে। অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে ৭কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বালু-মাটির তৈরী বাঁধের প্রায় শতাধিক জায়গায় ঈঁদুরের গর্তদিয়ে পশ্চিম তীরে পানি চুইয়ে আতংকের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে যমুনা নদীর পানি কমে গেছে। শনিবার সকালে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে পানি কমলেও দুর্গত এলাকার মানুষের দূর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইছামতি ও বাঙ্গালী নদীতেও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহে বাঙ্গালী নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করে। ১ সেন্টিমিটার পানি কমে শনিবার ভোরে ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত বুধবার রাতে নিমগাছী ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামে বাঙ্গালী নদীর শাখা নদীর মুখে বাঁধ ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে।
সরেজমিনে জানা যায়, নিমগাছী ইউনিয়নের ৭টি, কালেরপাড়া’র ১০টি, চিকাশী’র ১২টি, এলাঙ্গীর ১২টি, চৌকিবাড়ী’র ২টি, মথুরাপুরের ২টি, ধুনট সদরের ৯টি, গোসাইবাড়ী’র ৫টি, ভান্ডারবাড়ী’র ৮টি, গোপালনগর ইউনিয়নের ৫টি ও ধুনট পৌর এলাকার ২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের প্রায় ৭হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ৭৪টি গ্রামের অধিকাংশ জায়গায় কৃষকের ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এছাড়াও উপজেলার ধুনট সদরের সিংগারবিল, গৌটার বিল, বেলকুচি, চৌকিবাড়ীর নয়াচান্দিয়ার ও নসরতপুর গ্রামের প্রায় দেড় হাজার বিঘা আবাদী জমি বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব জমিতে কৃষকের রোপা আমন ধান, আখ, আদা, হলুদ, মরিচ, বেগুনসহ অন্যান্য শাক-সবজি রয়েছে। প্রায় ৫হাজার হেক্টর আবাদী জমির ফসল বিনষ্ট হওয়ায় ১২ হাজার কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্লাবিত এলাকার অসংখ্য জলাশয়ের মাছ ভেসে যাওয়ায় মৎস্য চাষীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। গোবাদী প্রাণীর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা জানান, বাঙ্গালী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পুরো উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি’র অবনতি ঘটছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন করে যেসব এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে, এসব এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা শুরু করার প্রস্তুতি চলছে। তাছাড়া কৃষকের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের জন্য সরকারী সহায়তার জন্য সুপারিশ করা হবে।


