ধুনটে মাল্টিমিডিয়া পাঠদান কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে

জিল্লুর রহমান.

সাদা স্কীনে আলো ফেলেছে প্রজেক্টর। সে আলোয় ফুটে উঠেছে কার্টুনের ছবি। পাঠ্য বইয়ে থাকা গল্পটি বলছিল কার্টুন ছবিটি। সাউন্ড বক্স থেকে ভেসে আসছে শিক্ষার্থীদের কানে। সাদা স্কীনে ফুটে ওঠা কার্টুনের দিকে তাকিয়ে মনোযোগ দিয়ে গল্প শুনছিল শিক্ষার্থীরা। এভাবেই ছবি আর গল্পে গল্পে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলছে বগুড়ার ধুনট এনইউ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে।
ধুনট এনইউ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫টি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরমধ্যে ৯টি শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া পদ্ধতিতে পাঠদান করানো হয়। এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১১০০। ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাল্টিমিডিয়া পাঠদান কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। তবে ৬টি শ্রেণিকক্ষে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর ও অন্যান্য সামগ্রী নেই। ফলে কয়েকটি বিষয়ে মাল্টিমিডিয়া পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। মাল্টিমিডিয়া পাঠদান কার্যক্রমের ফলে শিক্ষার্থীদের সামনে কঠিন ও দূর্বোধ্য বিষয় গুলোকে ছবি ও এ্যানিমেশনের সাহায্যে সহজ ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ ও উপস্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল ফারুক জানায়, মাল্টিমিডিয়া পাঠদান কার্যক্রমের ফলে শ্রেণিকক্ষে আর বোরিং লাগে না। এছাড়া খুব সহজে পাঠ্য বইয়ের বিষয় গুলো বোঝা সম্ভব হয়। বিশেষ করে পর্দায় দৃশ্য উপস্থাপন হওয়ায় বুঝতে সুবিধা হয়। ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান জানায়, মাল্টিমিডিয়া পাঠদান কার্যক্রমের ফলে বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত বই বহনের ঝামেলা কমেছে। শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকার ক্ষেত্রেও আগ্রহ বেশি থাকে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শংকর কুমার ঘোষ জানান, মাল্টিমিডিয়া পাঠদান কার্যক্রমের ফলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ও উপস্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রযুক্তির প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এ পদ্ধতিতে পাঠদানের ফলে শিক্ষার্থীরা সহজে বুঝতে পারছে এবং তাদের মধ্যে মুখস্ত বিদ্যার প্রবনতা কমেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইন্টারনেট থেকে দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি, বিষয় ও শ্রেণি উপযোগী তথ্যচিত্র সংগ্রহ করে শিক্ষকরা কন্টেন্ট তৈরী করে পাঠদান করেন। এতে শিক্ষকদের মাঝেও দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সামনে পাঠদান সম্পন্ন করা যাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান জানান, মাল্টিমিডিয়া পাঠদান কার্যক্রম সরকারের মহতী উদ্যোগ। এ কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের মাঝে লেখাপড়ার আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যালয়ের অবশিষ্ট ৬টি শ্রেণিকক্ষকে মাল্টিমিডিয়া পাঠদান কার্যক্রমের আওতায় নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে কন্টেন্ট তৈরী ও সহজ ভাবে মাল্টিমিডিয়া পদ্ধতি ব্যবহারের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ