ধুন‌টে নারী ইউ‌পি সদস্য হত্যাকা‌ন্ডের মূল হোতা গ্রেপ্তার

বগুড়ায় একটি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা আব্দুল লতিফ শেখ(৬০) কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। বৃহস্পতিবার মুন্সিগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আব্দুল লতিফ ধুনটের মৃত আহাদের ছেলে।

র‍্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত লতিফ ছোটবেলা থেকে ফার্নিচার তৈরীর কাজ করত। পরবর্তীতে তিনি তার নিজের বাড়িতেই কর্মচারী রেখে ফার্নিচার তৈরী করে তা বিক্রি করতো। গ্রেফতারকৃত লতিফের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে বগুড়াতে একটি ধর্ষণ মামলা রয়েছে এবং ওই মামলায় তিনি সাত মাস কারাভোগ করেছে।

এর আগে, গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বগুড়ার একটি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে ২২ সেপ্টেম্বর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের কুড়িগাঁতী গ্রামের একটি ইটভাটার পাশে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর বগুড়ার ধুনট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা রুজু করে। যার মামলা নম্বর-১০।

গ্রেফতারকৃত আব্দুল লতিফ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, হত্যাকান্ডের প্রায় সাত মাস আগে ইউনিয়ন পরিষদে কম্বল বিতরণের একটি অনুষ্ঠানে ভিকটিমের সাথে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের সাথে তিনি ঘনিষ্ঠতার চেষ্টা করে। এসময় তারা ইউনিয়ন পরিষদ ও আশেপাশের এলাকায় বিভিন্ন সময় সাক্ষাত করে। গেল বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারকৃত লতিফ কৌশলে ভিকটিমকে ধুনটের মথুরাপুর এলাকার একটি ইট ভাটার পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে আলাপচারিতার কৌশলে ভিকটিমকে পানীয়ের সাথে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় ভিকটিম তাকে বাঁধা দেয়।

একপর্যায়ে লতিফ তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ভিকটিম ধর্ষণের বিষয়টি পরিবার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়ে দিলে গ্রেফতারকৃত লতিফকে পুনরায় জেলে যেতে হতে পারে এই আশংকা থেকে তিনি ভিকটিমের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরে লাশ একটি ইটভাটার পাশে রেখে পালিয়ে যায়।

নিজেকে সন্দেহের বাইরে রাখতে লতিফ কৌশলে মৃতদেহটি উদ্ধার কাজে স্থানীয়দের সহায়তা করে পরবর্তীতে ভিকটিমের দাফনে অংশগ্রহণ করেন এবং ভিকটিমের পরিবারের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখেন।

পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হতে পারে এই আশংকা থেকে লতিফ তার নিজ এলাকা ত্যাগ করে প্রথমে ছদ্মবেশী শ্রমিক হিসেবে নোয়াখালীতে কিছুদিন কাজ করে পরবর্তীতে মুন্সিগঞ্জে আত্মগোপন করে।

র‍্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানী কমান্ডার সোহরাব হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আব্দুল লতিফ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ