প্রাকৃতিক ওষুধ যখন হাসি

নিউজ ডেস্ক.

‘হাসতে নাকি জানে না কেউ কে বলেছে ভাই
এই দেখো না কত হাসির খবর বলে যাই।
হাসি নিয়ে কবিতার যেমন শেষ নেই তেমনি হাসির গল্প-কৌতুকও আছে অনেক। যুগে যুগে জ্ঞানীগুণীরা সবাই হাসির প্রয়োজনীয়তার কথা বলে গেছেন। হাসি একটা পুরো চেহারাই বদলে দিতে পারে। হাসিমাখা মুখ দেখলেই কেমন মন ভালো হয়ে যায়। হাসি মুখের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় যেন শতগুণ। সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয় হাসি। তবে শুধু মুখের সৌন্দর্যই না, হাসি আমাদের আরও অনেক উপকার করে।
মানুষকে আকর্ষণীয় করে তুলতে: হঠাৎ হয়তো পুরনো মজার কোন স্মৃতি মনে পড়ায় মুখে আপনার ফুটে উঠলো এক চিলতে হাসি। এই অবচেতনভাবে মুখে হাসির রেখা আপনাকে করে তুলতে পারে অন্যরকম আকর্ষণীয় যা নিঃসন্দেহে ভ্রু কুচকে তাকানো বা মুখে ভেংচি কাটার চেয়ে দেখতে ভালো লাগবে।
বদলে দিতে পারে মুড: মন খারাপের সময় হাসাটা একটু কষ্টকরই বটে কিন্তু আপনি কি জানেন, হাসি আপনার শরীরে এমন একটি ট্রিক খাটাবে যে যতো মন খারাপই থাক না কেনো একটু হাসি আপনার মুড নিমিষেই ঠিক করে দিবে।
হাসি সংক্রামক: কিছু কিছু রোগ আছে যা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে আরেকজনের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। রোগ না হলেও হাসি এমনি একটি সংক্রামক ব্যাপার যা একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। হাসি শুধু নিজের মনই ভালো করে দেয় না আশেপাশে যারা থাকে তাঁদের মধ্যেও একটা খুশির পরশ বুলিয়ে দেয়।
মনের চাপ কমাতে হাসি: মানুষ যখন স্ট্রেসে থাকে, তখন তা চেহারাতেও প্রকাশ পায়। কিন্তু হাসি মানুষকে ক্লান্ত ও বিরক্তি থেকে মুক্তি দেয়। একমাত্র হাসির মাধ্যমেই মনের চাপ কমে যায় অনেকখানি তা নিজের হাসি হোক বা অন্য কারো হাসি দেখেই হোক। তাই যখন খুব স্ট্রেসে থাকবেন, তখন হাসার চেষ্টা করুন অথবা কোন হাসিমুখ খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন দেখবেন কেমন কাজ করছে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় হাসি: হাসি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সহায়ক। যখন কেউ হাসতে থাকে তখন তা শরীরের প্রতিরোধক ফাংশনগুলো দ্রুত কাজ করা শুরু করে এবং মানুষকে রিলাক্স করতে এবং ফ্লু ও ঠাণ্ডা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। গবেষকেরা দেখেছেন, এক ঘন্টার একটা হাসির ছবি দেখলে টিউমার সূষ্টিকারী কোষকে প্রতিরোধ করা যায় অনেকাংশে।
ব্লাড প্রেসার কমাতে হাসি: হাসি ব্লাডপ্রেসার কমাতেও সাহায্য করে। আপনার কাছে যদি ব্লাডপ্রেসার মাপার যন্ত্র থাকে তাহলে খুব সহজেই এই পরীক্ষাটি করতে পারবেন। যখন বাড়িতে বসে বই পড়ছেন তখন একবার মেপে নিন আপনার ব্লাডপ্রেসার তারপর কিছুক্ষণ পর হাসুন কয়েক মিনিট। তারপর আরেকবার মেপে নিন আপনার ব্লাডপ্রেসার। পার্থক্যটা আপনিই ধরতে পারবেন।
প্রাকৃতিক ওষুধ যখন হাসি: এক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেইনের নার্ভাস সিস্টেম ঠিক রাখতে, রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে এবং ব্যাথা নিরাময়ে হাসি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
হাসি ধরে রাখে যৌবন: হাসি মানুষের মুখের রেখা টানটান রাখতে সহায়তা করে ফলে চামড়া ঝুলে পরে মানুষকে বৃদ্ধ দেখায় না। এছাড়াও যারা সবসময় হাসে তাঁদের তরুনদীপ্ততা অন্যদের চেয়ে বেশি এবং তাঁদের দেখতেও ভালো লাগে।
নিরোগ থাকতে হাসি: মন খুলে হাসতে পারলে অ্যাজমা, এমফাইসেমিয়া বা সাইনোসাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। শিশুকে বেশির ভাগ সময়ে হাসি-খুশির মধ্যে রাখতে পারলে তার লিভার ও ডাইজেস্টিভ সিস্টেম-এর ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয় না।
ইতিবাচক হতে সাহায্য করে হাসি: হাসি মানুষের নেতিবাচক মনোভাব কমিয়ে ইতিবাচক চিন্তা করতে সাহায্য করে। হাসির মাধ্যমে মনের অবসাদ, হতাশা দূর হয়। হাসি মানুষের শুধু শরীরের অসুখই সারায় না পাশাপাশি মনের অসুখও সারায়।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ