
বগুড়া- ৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রস্তুতি নিতে তিনি কেন্দ্রীয় সবুজ সংকেত পেয়েছেন। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার কর্মী সমর্থকরা এমন দাবী করেছেন।
এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের নিয়ে শনিবার ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন “ধানের শীষের মনোনয়ন যাঁকে দেওয়া হবে, তাঁকে বিজয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে”।
ওই বৈঠকে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, বিএনপির নির্বাহি কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান হারেজ, ফজলুর রহমান খোকন, ধুনট উপজেলা বিএনপির সভাপতি একেএম তৌহিদুল আলম মামুন ও শেরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর মঙ্গলবার রাত থেকে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ প্রার্থী হিসেবে ‘গ্রীন সিগন্যাল’ পেয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। তাঁর কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই ফেসবুকে “আলহামদুলিল্লাহ” লিখে পোস্ট দিতে শুরু করেন। এতে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ধারণা তৈরি হয়, আসন্ন নির্বাচনে তিনিই হতে পারেন বিএনপি মনোনিত প্রার্থী।
১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। ২০০৮ সালে প্রার্থী পরিবর্তন করা হলে মনোনয়ন পান শেরপুর পৌরসভার মেয়র জানে আলম খোকা । ওই নির্বাচনে এ আসন হারায় বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বগুড়া ৫ আসনে পরাজিত হলেও বগুড়া ৬ আসনের উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন জিএম সিরাজ। এছাড়াও তিনি বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

বুধবার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন ‘‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে থেকে দলের জন্য কাজ করছেন। তাঁরা সকলেই দলের প্রতি নিবেদিত ও যোগ্য নেতৃত্বের পরিচয় বহন করেন। মতভেদ থাকতেই পারে, কিন্তু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী আদর্শ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ত্যাগ, এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি তাঁদের বিশ্বাস ও অঙ্গীকার এক ও অভিন্ন। দলীয় সিদ্ধান্তে তাঁরা সবাই একসঙ্গে জনগণের পাশে থাকবেন।’’

তিনি আরো লেখেন, ‘‘আমাদের মনে রাখতে হবে — মনোনয়ন পাওয়াই বিজয় নয়। প্রকৃত বিজয় তখনই হবে, যখন জনগণের ভোটে ‘ধানের শীষ’ বিজয়ী হবে। তখনই গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার ও দেশের উন্নয়নের পথ প্রশস্ত হবে। এখনই সময় মাঠে নেমে জনগণের কাছে দলের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার। আমরা বিশ্বাস করি, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে ‘ধানের শীষ’ আবারও বগুড়া-৫ আসনে বিজয়ের প্রতীক হবে। তাই দল যাকে যোগ্য মনে করবে, তার প্রতি আস্থা রাখতে হবে এবং জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যেতে হবে। এখন আনন্দের নয়, দায়িত্ব, ধৈর্য ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার সময়। প্রকৃত বিজয় আসবে জনগণের ভোটে, জনগণের ভালোবাসায়।’’
বুধবার শেরপুরে ধানের শীষের প্রচারনামুলক উঠান বৈঠকে বক্তৃতাকালে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে বলেন ‘ধানের শীষ প্রতীক দল আমাকে দিয়েছে। এ প্রতীক আপনাদের, সাধারণ মানুষের, শ্রমিকের-কৃষকের, সকল শ্রেণির মানুষের প্রতীক ধানের শীষ। আমি শুকরিয়া আদায়করি আল্লাহতায়ালা পুনরায় আমার হাতে ধানের শীষ তুলে দিয়েছেন।
বগুড়া- ৫ আসনে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ প্রভাবশালী নেতা। তবে নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দিতে প্রয়োজন সাংগঠনিক ঐক্য। অতীতের অভিজ্ঞতা ও সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তৃনমুলের নেতাকর্মীরা।
