মুক্তি পেল কলকাতার বাংলা ছবি ‘পোস্ত’

বিনোদন ডেস্ক.

মুক্তি পেল শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায় পরিচালিত ছবি ‘পোস্ত’। গত শুক্রবার কলকাতার এক থিয়েটারে হলে ছবির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয়৷ শিবপ্রসাদ এবং নন্দিতার ছবির গল্পে মানবিক সম্পর্কের সহজ-জটিল-কুটিল ফ্যাক্টরগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে৷এ ছবিতেও তার ব্যাতিক্রম নেই৷এক সন্তানের সঙ্গে তার বাবা-মা ও দাদু-ঠাকুমার সম্পর্কের গল্প ‘পোস্ত’৷
‘পোস্ত’, অর্থাত এই গল্পের অর্ঘ্য বসু রায় থাকে তার দাদু-ঠাকুমার কাছে, শান্তিনিকেতনে। তাদের সান্নিধ্যেই বড় হতে থাকে পোস্ত৷ ৭ বছরের ছোট্ট ছেলেটির কাছে দাদু-ঠাকুমা যাকে হলে জান-প্রাণ, এবং উল্টো দিকে দাদু অর্থাত্ সৌমিত্রবাবু এবং ঠাকুমা লিলি চক্রবর্তীর কাছে পোস্ত যেন সেই ফিরে পাওয়া নিজের সন্তান৷অন্যদিকে পোস্তর চাকুরিরত বাবা-মা অর্ণব এবং সুস্মিতা, কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন৷মাঝেমধ্যে আসেন পোস্তকে দেখতে৷‘পোস্ত’কে মিস করেন মা সুস্মিতা ( মিমি চক্রবর্তী)৷ আবার ছেলে-বউকে নিয়ে বিদেশ পাড়ি দিতে চান ‘পোস্ত’র বাবা অর্ণব অর্থাৎ যীশু সেনগুপ্ত। শুরু হয় সংঘাত৷
পোস্তর ওপর কার অধিকার বেশি? বায়োলজিকাল বাবা-মায়ের না যারা তাকে বড় করে তুলছে তিলে তিলে?
গল্পের এক পর্যায়ে পোস্ত’র বাবা মা পোস্তকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু দাদু দিদিমা পোস্তকে ছাড়তে নারাজ। সেই নিয়েই দুই বাবা-মায়ের দ্বন্দ গড়ায় আদালত অবধি৷
কিন্তু পোস্ত? সে কি চায়?
না সে জানা যাবে না অত সহজে৷ শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়ের দাবি সিনেমাহলে এসে দেখতে হবে সিনেমাটি৷
ছবিতে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, লিলি চক্রবর্তী, যীশু সেনগুপ্ত, মিমি সহ আরও অনেকে। ছবিতে একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাবুল সুপ্রিয়ও৷ছবিতে একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাবুল সুপ্রিয়ও, চরিত্রের নাম বনি, এখানে সে যীশু ওরফে অর্ণবের বন্ধু৷অভিনয় করতে পছন্দ করেন বাবুল সুপ্রিয়। আগে ‘চাঁদের বাড়ি’ ছবিতে অভিনয়ও করেন বাবুল৷মন্ত্রী বাবুলের কাজ অনেক তবুও ফাঁকতালে অভিনয়ও বেশ ভালই সামলেছেন তিনি৷
তবে পোস্ত ছবির পোস্তই কিন্তু চেরি অন দ্য কেক৷ যাকে বলে মধ্যমণি৷অর্ঘ্য বসু রায় অভিনয় করেছে পোস্তর চরিত্রে৷প্রিমিয়ারে দেখাও গেল তাঁকে৷ উত্সাহ তো ফুটে উঠছিল তার মুখে সে সঙ্গে একটু ভয়ও ছিল তাতে। পোস্ত খেতে পছন্দ না করে সে, তবে এই ছবিটি করতে তাঁর বেশ ভালই লেগেছে, সে কথাই জানাল ছোট্ট অর্ঘ্য। এটাই প্রথম ছবি অর্ঘ্য’র। কাজেই ছবি নিয়ে উতসাহ সে নিয়েই, আর ভয়? প্রিমিয়ারের এত দর্শক দেখে ভয় তো লাগবেই, এতো ভিড়ে যদি সে পড়ে যায়! তবে ছোট্ট অর্ঘ্য সে ভয় কাটিয়ে মায়ের হাত ধরে কিন্তু দিব্যি প্রিমিয়ারের সন্ধ্যেকে জমিয়ে রেখেছিল মিষ্টি পোস্ত। আদো আদো বুলিতে দর্শকদের ছবিটি দেখার আর্জিও জানাল সে।
ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করছেন অনুপম রায় এবং অনিন্দ্য চ্যাটার্জী, মোট চারটি গান রয়েছে এই ছবিতে। গান গেয়েছেন অনুপম রায়, অনিন্দ্য চ্যাটার্জী, নচিকেতা চক্রবর্তী ও প্রসমিতা। প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন সবাই, তবে বিশেষ কারণে এইদিন উপস্থিত থাকতে পারেননি নচিকেতা চক্রবর্তী।
‘‌ছবিটি মানুষের ভাল লাগবে। সকল বয়সী দর্শকদের জন্য তৈরি এই ছবিটি’, এইদিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে তেমনই শোনা গেল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মুখ থেকে।
ছবিতে প্রথমবার মা এর চরিত্রে দেখা যাবে মিমি চক্রবর্তীকে। অনস্ক্রিন মাকে পর্দায় দেখতে এক্সাইটেড ছিলেন মিমিও৷
যীশু সেনগুপ্ত বললেন ‘এই ধরণের গল্পে প্রথম কাজ করছি। ছবির গল্পও বেশ হার্ট টাচিং৷ এই ছবি নিয়ে যে প্রথম থেকেই আশাবাদী ছিলাম’
প্রিমিয়ারে বিশেষ কিছু বললেন না শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং নন্দিতা রায়, শুধু বললেন ‘আজ আমরা নয়, কথা বলবেন দর্শকরা’
প্রিমিয়ার উপস্থিত ছিলেন কনীনিকা বন্দোপাধ্যায়, অপরাজিতা আঢ্য, মনামি ঘোষ, অনিন্দ্য চ্যাটার্জী, শঙ্কর চক্রবর্তী সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ