শিউলীর সকালের স্বপ্ন রাতেই ঝড়ে গেল


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি.

নিজেকে স্বাবলম্বী করতে ঋনের ৪লাখ টাকায় একটি পল্ট্রিফার্ম গড়ে তোলেন শিউলী রানী রায়। শুক্রবার সকালে ফার্মে তোলেন ৪ হাজার লেয়ার মুরগীর বাচ্চা। এসব বাচ্চা বড় হয়ে ৫ মাস পরেই ডিম দিবে। সেই ডিম বিক্রি করে ঋনের কিস্তিসহ চলবে তার সংসারের চাকা। এ স্বপ্নই ছিল শিউলী রানীর চোখে মুখে।
শুক্রবার সকালে বোনা স্বপ্ন রাতেই কালবৈশাখীর ছোবলে তছনছ হয়ে গেল নারী উদ্যাক্তা শিউলী রানীর স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন। শিউলী রানী লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের কচুমুড়া গ্রামের নিরঞ্জনের স্ত্রী। নিরঞ্জন ওই এলাকার একটি পল্ট্রিফার্মের মালিক।
বিকেলে যে বাচ্চা গুলো ফার্মে কিচির মিচির শব্দ করে খাবার খেত আর ছুটা ছুটি করত। রাতের আঁধারে থেমে গেল ফার্মের সেই কিচির মিচির শব্দ। রাতেই নিস্তব্দ হয়ে গেল ফার্মটি। ভেঙ্গে গেলে শিউলীর স্বপ্ন।
ফার্মের টিনের ছাউনীর ফাঁকে হাত লাগিয়ে জিবিত বাচ্চা উদ্ধারের চেষ্টা করছেন শিউলী। কিন্তু পেলেন না সব বাচ্চায় মারা গেছে কালবৈশাখী ঝড়ের ছোবলে। ঝড়ে পুরো ঘরটি বাচ্চাগুলোর উপর পরায় একটি বাচ্চাও জিবিত নেই।

    শিউলী রানী জানান, বেকারত্বের অভিশাপ মোচনে নিজেকে স্বাবলম্বী করে সংসারের চাকা সচল করতে গত ৫ মাস আগে ব্র্যাক থেকে ঋন নিয়ে নিরঞ্জন পল্ট্রিফার্মটি গড়ে তোলেন। প্রথমে মুরগির মাংস উৎপাদন করে ভাল মুনাফাও পেয়েছেন। মাংসের চেয়ে মরগীর ডিমের চাহিদা বেশি হওয়ায় লেয়ার বাচ্চা পালনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
    সেই স্বপ্ন পুরনে ঋনের পরিমান বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকায় প্রায় ৪ হাজার লেয়ার মুরগীর বাচ্চা কিনেছেন শুক্রবার সকালে।
    সারাদিন মুরগীর বাচ্চাগুলোকে খাইয়েছেন পরম যত্নে। কিন্তু বিধিবাম রাতের আঁধার নামতেই কালবৈশাখীর ছোবলে লন্ডভন্ড হয়ে গেলে শিউলীর স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন। অন্যের সহযোগীতা ছাড়া কেউ স্বাবলম্বী হতে পারে না। তাই ঋনের টাকায় পল্ট্রি ফার্মটি গড়ে তুলি। কিন্তু কালবৈশাখী ঝড় আমাকে ঋনের টাকার বোঝা মাথায় দিয়ে গেল। এখন স্বপ্নটা আমার জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে গেল। ঋনের কিস্তি কি করে পরিশোধ হবে।
    ওই এলাকার কলেজ শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র জানান, শিউলী নিরঞ্জন দম্পত্তি অনেক কষ্ট করে ফার্মটি দিয়েছিল সংসারে চাকা সচল রাখতে। কিন্তু ঝড়ে পুরো সংসার তাদের তছনছ হয়ে গেল।
    শুক্রবার রাতের এ ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলার কয়েক হাজার ঘর বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিপনী বিতান লন্ডভন্ড হয়ে যায়। রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এ ঝড় চলে টানা রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। অসংখ্য গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুটি উপড়ে পড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে এখন পর্যন্ত সেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। একারনে ওই এলাকা গুলোয় এখন পর্যন্ত বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
    লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ মোঃ আলাউদ্দিন খাঁন জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করতে ইউএনওসহ সকল দফতরকে মোবাইলে বলা হয়েছে। তবে ঝড়ে কিছু গবাদী পশু মারা গেলেও কোথাও কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায় নি।

    অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ