Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
আবু জাহের. শেরপুর (বগুড়া) থেকে
২০ গ্রামের প্রায় লক্ষাধীক মানুষের চলাচলের ৪টির সড়ক চলাচলের অনুপোযুক্ত হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে। ধান রোপনের এই সময়ে তারা সার সহ কৃষিপন্য পরিবহনে কয়েকগুণ খরচ করেও কুল কিনার করতে পারছেনা। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কগুলোতে একহাটু পরিমান কাঁদা হয়। আর তখন গাড়ী চলাচলতো দুরের কথা, পায়ে হেটেই চলাচল করা কঠিন। তারপরেও ২০ গ্রামের প্রায় লক্ষাধীক মানুষজনকে এই সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে। আর এক কিলোমিটার এই সড়কের কারনেই শেরপুরের বিশটি গ্রামের মানুষকে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবত এই সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সেদিকে নজর নেই। ফলে এ সব এলাকার মানুষদেরকে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে হচ্ছে প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়ক ঘুরে। কিন্ত সেটিও এখন চলাচলের অনুযোগী হওয়ায় চরম বিপাকে ওই সকল গ্রামের মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মির্জাপুর বাজার হাইওয়ে সড়ক হতে মাত্র এক কিলোমিটার পশ্চিমে দড়িমুকুন্দ গ্রামের ওই সড়কটি বৃষ্টি হলেই চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পরে। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী মাকোরকোলা, রাজবাড়ী, রাজমুকুন্দ, খোট্রাপাড়া, দড়িমুকুন্দ, রাজারদিঘী, আড়ংশাইল, কদিমুকন্দ, হাতিগারা, বাঘমারা, ভাদাসপাড়া সহ প্রায় বিশ গ্রামের মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে তাদের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাছাড়া এ সব গ্রামগুলোর মধ্যে চারটি গ্রামের মানুষের এ সড়কটিই যাতায়াতের একমাত্র পথ হওয়ায় তাদের দূর্ভোগের মাত্রা আরো বেড়ে গেছে।
খোট্রাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল, পলাশ, মাসুদ ধুনট বার্তাকে জানান, সড়কটি সংস্কার করার জন্য সুষ্ক মৌসুমে নাম মাত্র মাটি কাটায় বৃষ্টির মৌসুমে ওই সকল স্থানে একহাটু কাদা জমে গেছে। ফলে গাড়ি চলাচল দুরের কথা পায়ে হেটে চলাচল করা যাচ্ছেনা। এই সড়কটি চলাচলের অনুপোযুক্ত হওয়ায় এতদিন ৫ কিলোমিটার ঘুরে মির্জাপুর যেতে হত। ফলে যেখানে ৩০ মিনিট সময় লাগার কথা সেখানে লাগছে দেড় থেকে দু-ঘন্টা। এ ছাড়াও এলাকাটি কৃষি নির্ভর হওয়ায় কৃষকদের পন্য সরবরাহে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। এই এলাকার মানুষের প্রায় সকল প্রকার প্রয়োজনীয় কাজ মির্জাপুর বাজারেই করতে হয়, আর এ জন্য প্রতিদিনই তাদেরকে এই সড়ক পথে চলতে হয়। মির্জাপুর যাবার বিকল্প পথ বীরগ্রামের সড়কটিও এখন চলাচলের অনুপোযুক্ত হয়ে গেছে। কিছুদিন হলো ওই সকল এলাকার সব পন্যই বীরগ্রামের রাস্তা দিয়ে নিয়ে যেতে হতো কিন্ত বর্তমানে ওই সড়কটি চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপোযুক্ত হওয়ায় দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে।
রাজবাড়ী গ্রামের ভ্যান চালক আবুল হোসেন ধুনট বার্তাকে জানায়, আমাদের মতো গরিব মানুষেরা ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। কিন্ত বৃষ্টির সিজন শুরুর পর থেকে এ সড়কে ভ্যানগাড়ি চালানো যায়না। ফলে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়।
খোট্রাপাড়া গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম ও আমিনুর রহমান ধুনট বার্তাকে জানান, সড়কটি তাদের চলাচলের একমাত্র পথ হওয়ায় তিনি মির্জাপুর হাটে ধান বিক্রি করতে পারছেন না এবং কৃষি আবাদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী আনতে প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে চারগুন ভাড়া দিয়ে আনতে পারছেননা। এতে তাদের সময় ও আর্থিক দুই দিক দিয়েই ক্ষতি গ্রস্থ হতে হচ্ছে। এলাকাবাসি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত সড়কটির এমন দুরাবস্থা থাকলেও সেদিকে কোন নজর নেই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের।
মাছচাষী রাজবাড়ী গ্রামের আব্দুল মজিদ ধুনট বার্তাকে জানান, শহর হতে দুই কিলোমিটার দুরের গ্রামের সড়ক এই বেহাল দশা চিন্তাই করা যায়না। সড়ক খারাপের কারনে মাছ বাজার জাত করতে পারছিনা। এছাড়াও মাছের খাদ্য আনা নেওয়া করা যাচ্ছেনা।
রাজবাড়ী গ্রামের টলি চালক ইমাম হোসেন ধুনট বার্তাকে জানান, এই ১০/১২ টি গ্রামের পরিবহন বলতে একমাত্র টলি। এই টলিগুলো দিনে ১টিপের বেশি মারতে পারেনা। কারন হিসেবে তিনি জানান, এই মালগুলো আনা নেয়া করতে ৫/৬টি জায়গায় আনলোড করে আগে খালি গাড়ি পার করতে হয়, পরে ই মালগুলো মাথায় করে নিয়ে আবারো টলিতে তুলতে হয়। তাছাড়া গাড়ি পার করা যায়না, একেকটি টলি পিছনে ৪জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে সড়কের এমন বেহাল দশা হয়েছে যে, কোন অবস্থাতেই মালামাল পরিবহন করা যাচ্ছেনা।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী মন্টু মাষ্টারের সাথে যোযাযোগ করা হলে তিনি ধুনট বার্তাকে জানান, এই সড়কগুলোর মধ্যে দড়ি মুকুন্দ, হাতিগাড়া ও ঘোলাগাড়ি সড়কটি এক সময় মির্জাপুর ইউনিয়নের মধ্যে ছিল কিন্ত এখন নতুন ইউনিয়নন শাহ-বন্দেগীর মধ্যে পরেছে। তবে রাস্তাগুলো জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করা প্রয়োজন। এছাড়া বীরগ্রামের রাস্তাটি সংস্কারের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব দবিবুর রহমান ধুনট বার্তাকে জানান, সড়কগুলোর বিষয়ে তার জানা নেই। তবে উপজেলার অনেক সড়ক এখন চলাচলের অনুপোযুক্ত হয়েছে। খোঁজ নিয়ে অগ্রাধীকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।