Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
নিউজ ডেস্ক.
ভরা মৌসুমে সাগরে ইলিশ ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে। কিন্তু বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায়। অথচ দেশের দক্ষিণাঞ্চলেও ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে মৎস্য বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এই অবস্থা শিগগির কেটে যাবে। সাগরের পাশাপশি নদীতেও ঝাঁকে ঝাঁকে মিলবে ইলিশ।
তারা বলেন, ইলিশের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সরকারের গৃহীত নানা কর্মসূচির সুফল দেখা যাচ্ছে। শ্রাবণী পূর্ণিমার পর থেকে ইলিশ ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে। ফলে দামও কমে আসছে। সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, ভাদ্র মাস ইলিশ ধরার উপযুক্ত মৌসুম। তাই ইলিশের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।
চট্টগ্রামের ফিশারিঘাটের আড়তদার পিপলু বড়ুয়া বলেন, শ্রাবণী পূর্ণিমার ‘জো’থেকে বেশি পরিমাণেই ইলিশ ধরা পড়ছে এবং ইলিশগুলো আকারেও বড়। তিনি বলেন, ‘পাইকারি দর হিসেবে প্রতি কেজিতে ছয়টা ইলিশের দাম ১৭৫ টাকা, প্রতি কেজিতে চারটা ইলিশের দাম ২০০ টাকা ও প্রতি কেজিতে দুই-তিনটা ইলিশের দাম ২৭৫ টাকা। তবে ৭০০ গ্রাম থেকে এর বেশি ওজনের ইলিশের দাম ৪২৫ টাকা।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০০২-২০০৩ অর্থবছরে দেশের উৎপাদিত ইলিশের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিকটন। যা অনেক প্রচেষ্টার পর ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে উৎপাদিত ইলিশের পরিমাণ হয়েছি চার লাখ ২৭ হাজার মেট্রিকটন। এ বছর উৎপাদনের পরিমাণ আরো বাড়বে।
জলবায়ুর প্রভাবে ইলিশ ধরার মৌসুম এবার জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে পিছিয়ে আষাঢ়ের শেষের দিক থেকে শুরু হয়েছে। এ হিসেব অনুযায়ী শেষ কার্তিক পর্যন্ত ইলিশ মিলবে। এরপরেও বাজারে ইলিশের পরিমাণ ছিল অন্য দেশের তুলনায় ঈর্ষণীয়। আরও দুইমাস ইলিশ পাওয়া যাবে জেনে জেলেরাও খুব খুশি।
বিশ্ববাজার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পুরো বিশ্বের ৭০ শতাংশ ইলিশের যোগান বাংলাদেশের। বাকি ৩০ শতাংশের মধ্যে ভারত ১৫ শতাংশ, মিয়ানমার ১০ শতাংশ ও অন্যান্য দেশের ৫ শতাংশ।
এদিকে ভরা মৌসুমেও ইলিশ নেই পদ্মা-মেঘনার চাঁদপুরের সীমানায়। যদিও এখানকার ইলিশ সমাদৃত দেশজুড়ে। কিন্তু সেই চাঁদপুরের জেলেদের জালে ইলিশের পরিবর্তে ধরা পড়ছে ছোট ছোট জাটকা। জানা যায়, তিনমাস আগেও জেলেরা নদীতে জাল পেতে পায়নি সেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। আশায় ছিল আগস্ট মাস থেকে ইলিশ ধরা পড়বে। নদীতে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা চষে বেড়ালেও ইলিশের দেখা মিলছে না। আর যেসব জেলে কারেন্ট জাল ব্যবহার করেন তারা পাচ্ছেন ৭ থেকে ৮ ইঞ্চি সাইজের জাটকা। তবে দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা ছোট-বড় সাইজের ইলিশে ভরপুর শহরের বড় স্টেশন মৎস্য আড়ৎ।
চাঁদপুরে ইলিশের আড়তদার শাহ আলম জানান, আগস্ট মাসে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়বে, সেই আশায় ছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না। বাকী সময়ে ইলিশ পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। প্রতি বছর এই সময় কয়েকটন দেশি ইলিশ বিক্রি হতো এবার হয় না।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সফিকুর রহমান জানান, দক্ষিণাঞ্চলে ইলিশ ধরা পড়ছে প্রচুর। কিন্তু পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশের সংখ্যা খুবই কম। এ কারণে চাঁদপুরের মৎস্য আড়তে বেশিরভাগ দক্ষিণাঞ্চলীয় ইলিশ আমদানি হচ্ছে। তবে এখন পানি বাড়ার কারণে ইলিশ ধরা পড়তে পারে বলে জানান।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান জানান, আগস্ট মাস থেকে ইলিশ মৌসুম শুরু হলেও সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ইলিশ বেশি পাওয়া যায়। আমরা আশা করছি ঠিক সময়ে ইলিশ ধরা পড়বে। তবে দক্ষিণাঞ্চলে এখন থেকেই ইলিশ ধরা পড়ছে। পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ দেরিতে আসার বিষয়টি ডুব চর ও বুড়িগঙ্গা নদীর ময়লা আবর্জনার কারণেও হতে পারে। ইলিশ মাছ তাদের অনুকূল পরিবেশেই থাকতে পছন্দ করে। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যে পদ্মা-মেঘনায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।