সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী মেহবুব চৌধুরীর জামিন

নিউজ ডেস্ক.



বন্ধ হয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহবুব চৌধুরীর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম লস্কর সোহেল রানা তার জামিন মঞ্জুর করেন।

শনিবার বিকেলে শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে ফেরার পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে দুদকের উপপরিচালক শেখ আবদুস ছালামের নেতৃত্বে একটি দল তাকে গ্রেফতার করে।

রবিবার দুপুরে মেহবুব চৌধুরীকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক শেখ আব্দুস সালাম। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মেহবুব চৌধুরীকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। একই সঙ্গে তিনি তার জামিনের বিরোধিতা করেন।

অপরদিকে মেহবুব চৌধুরীর আইনজীবী মো. মাসুমুর রহমান মজুমদার জামিনের প্রার্থনা করেন। আর দুদকের পক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম জুয়েল জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।

সিটিসেলের নামে এবি ব্যাংক থেকে অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগে গত বুধবার একটি মামলা করে দুদক। ওই মামলায় মেহবুব চৌধুরী ছাড়াও সিটিসেলের অন্যতম মালিক প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খানের পাশাপাশি এবি ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়।

সিটিসেলে সাত বছর ধরে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদে রয়েছেন মেহবুব চৌধুরী। তার আগে তিনি গ্রামীণফোনের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন।

বহুল আলোচিত পানামা পেপার্স ফাঁসকারী ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) ২০১৩ সালে অফশোর ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যে নথি প্রকাশ করেছিল ‘অফশোর লিকস’ নামে, তাতে বাংলাদেশিদের মধ্যে মেহবুব চৌধুরীর নাম ছিল।

দুদকের দায়ের করা মামলায় সিটিসেলের মূল কোম্পানি প্যাসিফিক টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিবিটিএল) চেয়ারম্যান মোরশেদ খানের স্ত্রী নাছরিন খানও আসামি। নাছরিন খান কোম্পানির পরিচালক। ১৬ আসামির মধ্যে পিবিটিএলের ভাইস চেয়ারম্যান আসগর করিমও রয়েছেন।

দুদকের মামলায় সিটিসেলের নামে এবি ব্যাংকের গ্যারান্টি নিয়ে আটটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনিয়মের মাধ্যমে ৩৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন-এবি ব্যাংকের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাইজার আহমেদ, প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফজলুর রহমান, প্রাক্তন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ক্রেডিট) ও বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মসিউর রহমান চৌধুরী, ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সালমা আক্তার, প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহম্মেদ চৌধুরী, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মহাদেব সরকার সুমন।

এ ছাড়া ব্যাংকটির এসভিপি ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার সৈয়দ ফরহাদ আলম, প্রাক্তন এসভিপি ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার আরশাদ মাহমুদ খান ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, অপারেশনস বিভাগের সিনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহানুর পারভীন চৌধুরী, প্রাক্তন এভিপি ও মহাখালী শাখা ব্যবস্থাপক জার ই এলাহী খান এবং রিলেশনশিপ অফিসার মো. কামারুজ্জামানকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা অসৎ উদ্দেশে অন্যায়ভাবে আর্থিক লাভের জন্য প্রতারণা, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে প্যাসিফিক টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিবিটিএল) ব্যাংক গ্যারান্টির আবেদন যাচাই-বাছাই না করেই এবি ব্যাংকের মহাখালী শাখার দেয়া প্রস্তাব প্রধান কার্যালয়ে পাঠান।

পরে তিন জন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সহায়তায় চারটি বোর্ড সভার মাধ্যমে ৩৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার অপরিবর্তনীয় শর্তবিহীন ব্যাংক গ্যারান্টি অনুমোদন করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মোট ৩৮৩ কোটি ২২ লাখ ৩৬৩ টাকা ১৩ পয়সা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ