সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের সংস্কৃতির একাল-সেকাল


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
আবদুল জলিল.

যমুনার উর্বর পলি আর ফসলের লকলকে ডগার মতোই চির সবুজকে বুকে লালন করে এগিয়ে চলেছে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের সংস্কৃতি। আর সংস্কৃতির অপরিহার্য অংশ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ভিন্নমাত্রিক পথচলার শুরু হয়েছে একটি সংগঠনকে ঘিরে। প্রিয় সেই সংগঠনের নাম নদী সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র। উপজেলা পরিষদের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই সংগঠনের পতাকাতলে এসেছে এলাকার সব শ্রেনির শিল্পীগণ। আর পেছন থেকে যারা এই সংগঠনকে সামনের পথে নেবার নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তারা হলেন কাজিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সঙ্গীতজ্ঞ অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক বকুল সরকার এবং কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাফিউল ইসলাম। তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবার কাজিপুরের শিল্পীদের পরিবেশনায় উদযাপিত হয় বিভিন্ন দিবসের বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠান। দর্শক শ্রোতাদের মনে এবার সঙ্গীতের নবজাগরণের সূচনা করেছে এই অনুষ্ঠান।
নদী সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এলাকার সব শিল্পীদের বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে পারদর্শি করে তুলতে নেয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা। এক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদ বিশেষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। একটি সুশৃংঙ্খল পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে এই কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। এবার নদী সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রেন শিল্পী আবদুল জলিল বিটিভির সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে শিল্পী বাছাই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নজরুল সঙ্গীতে সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রথম স্থান অর্জন করে রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছেন। শিল্পী আল মামুন খোকন রবীন্দ্র সঙ্গীতে এবং শিল্পী বেলাল হোসেন আধুনিক গানে জেলা পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে উপজেলার জন্য বিশেষ সম্মান বয়ে নিয়ে এসেছেন। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে গানের পাশাপাশি আবৃত্তি, নৃত্য, যন্ত্রসঙ্গীত বিষয়ে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

    নদী সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের কর্ণধার বকুল সরকার জানান, কাজিপুরের অতীত ইতিহাস যেমন সমৃদ্ধ, তেমনি সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও আমরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে চাই। আশা করি সামনের দিনগুলোতে কাজিপুরের সংস্কৃতির বিকাশ ভিন্নমাত্রা পাবে এবং দর্শকপ্রিয় হবে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন কাজিপুরের মাটি ও মানুষের শিল্পী বিশিষ্ট পালাকার ও বাউল সঙ্গীত শিল্পী মরহুম হাসান আলী চিশতি, আলহাজ্ব নবীর হোসেন চিশতি, স্বাধীন বাংলা বেতারের প্রথম কণ্ঠশিল্পী মরহুম শাহ আলী সরকারকে। তারা এলাকার জন্য অনেক সুনাম বয়ে এনে ইতিহাসের অংশ হয়ে আছেন। এই কাজিপুরেরই সন্তান মাহমুদুল হাসান লালন বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলার কালচারাল অফিসার হিসেবে নিয়োজিত আছেন। তিনি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে এমফিল করছেন।
    সিরাজগঞ্জের খ্যাতিমান সঙ্গীত শিক্ষক মিলন কুমার, তবলা বাদক সঞ্জীব কুমার কাজিপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ বেতারের নিয়মিত গেয়ে চলেছেন শিল্পী শাহজাহান আলী, বেলাল হোসেন ও মুকুল। এরা সবাই কাজিপুরের গর্বিত সন্তান। এই সংগঠনের সবার আদর ভালোবাসায় গেয়ে চলেছেন ফজলে আনোয়ার মিন্টু, নাজনীন, লিলি, শুভ্র, অন্তু, মুকুল, শফিকুল, নুরুল ইসলাম, শাপলা, মিম, আব্দুল কাদের, পিনথি, প্রজ্ঞা শ্রাবনী প্রমূখ শিল্পীবৃন্দ। সঙ্গীত পরিচালক শামস ইলাহী অনু এই সংগঠনের সঙ্গীতের দিক নির্দেশনায় রয়েছেন। এছাড়া আরও যেসব প্রতিভা বিকশিত হবার সুযোগ না পেয়ে অন্ধকারের অতল গহবরে হারিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে খুঁজে বের করে নদী সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র তাদের বিকশিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাবার ঘোষনা দিয়েছে। সব মিলে সবার ভালোবাসায় ধন্য হয়ে কাজিপুরের সংস্কৃতি এক ভিন্নমাত্রায় নতুনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

    অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ