Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি.
দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ নির্মাণ কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় বিপুল টাকা ব্যয়ে এই রেলপথটি নির্মাণ কাজ খুব শিঘ্রই শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, ভারতীয় এলওসি বা ঋণ চুক্তিতে অর্šÍভুক্তির জন্য রেল মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের সময় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে রেলপথ নির্মাণে সহযোগিতা দিতে লাইন অব ক্রেডিটের কথা বলেছেন। তারই আলোকে সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া সরাসরি ৭৪ কিলোমটার মিশ্রগেজ রেলপথ নির্মাণ হবে। বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের সময়ই উত্তরবঙ্গ থেকে রাজধানী ঢাকা রেল যোগাযোগে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ এই রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি গুরুত্ব দেয়া হয়। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ওই সময়ে এই রেলপথ নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয় এবং বাংলাদেশ উত্তরবঙ্গের সার্বিক উন্নয়নে এ রেলপথ নির্মাণ জরুরী।
তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী পরিবেশ বিপন্নের কথা বলে প্রকল্পটি স্থগিত করে রাখা হয়। এরপর প্রকল্পের ফাইলটি কখনও টেবিলে ওঠে কখনও ফিরে যায় হিমঘরে। পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালীরা দেনদরবার করে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ সরাসরি রেলপথ নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
অবশেষে এ প্রকল্পের ফাইল হিমাঘর থেকে বেরিয়ে আসে। বাংলাদেশ রেল মন্ত্রনালয়ের এক ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেললাইন স্থাপনের পর রাজধানী ঢাকা থেকে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোকে ঈশ্বরদী হয়ে উত্তরবঙ্গে পৌঁছতে প্রায় ৪শ’ থেকে ৫শ’ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। একারণে প্রায় দেড়শ’ কিলোমিটারেরও বেশি ঘুরপথ। বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ মনসুর আলী রেল স্টেশন পর্যন্ত ৭৪ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেললাইন স্থাপিত হলে উত্তরবঙ্গের যে কোন জেলায় যেতে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হবে। এতে সময় খরচ দুই বিষয়ে অনেকটা সাশ্রয় হবে। এ রেল পথ বাস্তবায়ন হলে ঢাকা থেকে বগুড়া পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ৩ ঘণ্টা।
এজন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ সরাসরি রেলপথ নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে প্রায় ১৫ বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে। এদিকে এ রেলপথ নির্মাণের দাবিতে বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে আন্দোলন হয়েছে। আন্দোলনের মুখে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ৭৪ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনের বিষয়টি দাতা সংস্থাকে জানানো হয়।
বগুড়া থেকে শাজাহানপুর শেরপুর হয়ে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণের জমি অধিগ্রহণের জরিপ কাজ শুরু হয়। এ রেলপথ বাস্তবায়নে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত পুরনো কাঁচা সড়কটিকে আমলে নেয়া হয়েছে। সিরাজগঞ্জের জেলা পরিষদের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এই সড়কটির সন্ধান দিয়ে সরকারকে জানালে তা গৃহীত হয়। এ প্রকল্পের ছারপত্র তৈরি হয়। বলা হয় ২০০৯ সালের মধ্যে এই কাজ শেষ হয়ে রেলগাড়ি চলাচল করবে। পরে সকল প্রকল্পই অজ্ঞাত কারণ ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ভেস্তে যায়। ২০১১ সালের ৯ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়া-সিরাজগঞ্জ সরাসরি রেললাইন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
তারপরই হিমঘর থেকে ফাইল বের করে ফের শুরু হয় চিঠি চালাচালি। ২০১৫ সালের ১২ নবেম্বর বগুড়ায় আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেললাইন নির্মাণের ঘোষণা দেন। এরপর ওই ফাইল জোড়ে নড়েচড়ে ওঠে এবং বৈদেশিক অর্থ সহযোগিতা প্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। চীনা রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়। পরবর্তী সময়ে তাও ভেস্তে যায়।
এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কামরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ বাস্তবায়নে প্রক্রিয়ার কথা জেনেছেন। ইতোমধ্যেই ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সিরাজগঞ্জ-বগুড়া ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণসহ পূর্বাঞ্চলেরও কয়েকটি রেলপথ ও অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নের ফাইল ওয়ার্ক শুরু করেছে বলে তিনি উল্ল্যেখ করেন।