ব্যস্ত সময় পার করছেন পূর্ণিমা

বিনোদন ডেস্ক.

কিছুদিন বিরতির পর কাজে ফিরেই আলোচনায় এলেন চলচ্চিত্রের প্রিয়মুখ পূর্ণিমা। এই মুহূর্তে বিজ্ঞাপনের মডেল, ছোটপর্দার কাজ এবং শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত জনপ্রিয় এ নায়িকা। আরো বিস্তারিত জানাচ্ছেন অভি মঈনুদ্দীন।
সমানতালেই পূর্ণিমা ব্যস্ত। পেশাগত কাজ নিয়ে যেমন ব্যস্ত, তেমনই ব্যস্ত সংসার ও সন্তান নিয়ে। একজন মেধাবী এবং গুণী অভিনেত্রী হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তিনি চেষ্টা করেছেন নিজের মনের মতো গল্পে এবং চরিত্রে কাজ করতে। সে কারণে অভিনয় জীবনের দীর্ঘ পথচলায় কখনো তাকে পিছিয়ে পড়তে হয়নি। কখনো হারিয়ে যাওয়া, কখনো আবার ফিরে আসা- এমনটিও হয়নি। পূর্ণিমা তাই তার নামের মতোই উজ্বল, সবসময় তার আলোয় আলোকিত করেন চারপাশ।
পূর্ণিমাকে খুব কাছ থেকে যারা দেখেছেন তারা একবাক্যে স্বীকার করেন যে আপাদমস্তক তিনি একজন ভালো মানুষ। শুধু তাই নয়, বেশ সহযোগিতা পরায়ণও বটে। তাই সহশিল্পীদের কাছে ভরসার আরেক নাম পূর্ণিমা।
পূর্ণিমাকে সর্বশেষ গত অক্টোবরে একটি বহুজাতিক কোম্পানির প্লাস্টিক সেলফের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করতে দেখা যায়। বিগত প্রায় ছয় মাস সংসার ও সন্তান নিয়েই ব্যস্ত সময় কেটেছে তার। কিন্তু পূর্ণিমার ইচ্ছে ছিল কাজে ফেরার। বিজ্ঞাপন, নাটক, টেলিফিল্ম কিংবা চলচ্চিত্র- মনের মতো হলেই কাজে ফিরবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
ঠিক হলোও তাই, একটি বহুজাতিক কোম্পানির মেহেদির বিজ্ঞাপনে কাজ করার মধ্য দিয়ে পূর্ণিমা আবার কাজে ফিরেছেন। চলতি বছর এটিই পূর্ণিমার প্রথম কাজ। গত ৫ এপ্রিল মানিকগঞ্জের মনোরম লোকেশনে বিশাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞাপনটির শুটিং সম্পন্ন হয়। বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করেছেন মিজানুর রহমান। ক্যামেরায় ছিলেন এই সময়ের মেধাবী সিনেমাটোগ্রাফার রাজু রাজ। এতে পূর্ণিমার সহশিল্পী হিসেবে আছেন চিত্রনায়ক ইমন।
বিজ্ঞাপনটিতে কাজ করা প্রসঙ্গে পূর্ণিমা বলেন, ‘বিজ্ঞাপনের কাজটি অনেকটা হঠাৎ করেই করা। এর গল্প ভাবনা, লোকেশন, বিজ্ঞাপনের জন্য বড় রকমের আয়োজন সবমিলিয়ে কাজটি অনেক ভালো লেগেছে বিধায় করেছি। তাছাড়া একই প্রতিষ্ঠানে আগেও কাজ করেছি। যে কারণে আমার মনে হয়েছে একটি ভালো কাজই হবে। কাজটি করে আমি সন্তুষ্ট।’
তিনি জানান, আসছে ঈদ উল ফিতরের আগেই বিজ্ঞাপনটি বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার শুরু হবে।
ঈদ আসতে এখনো অনেক দেরি হলেও ইতিমধ্যে তিনজন নির্মাতা পূর্ণিমাকে নিয়ে তিনটি নাটক নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। তারা হলেন দর্শকনন্দিত নাট্যনির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী, শ্রাবণী ফেরদৌস ও রাজীবুল ইসলাম রাজীব।
চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে চয়নিকা চৌধুরী নির্মাণ করবেন ‘তালপাতার পাখা’ নামের একটি নাটক। দীর্ঘদিনের নাটক নির্মাণের ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম পূর্ণিমাকে নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছেন চয়নিকা। ফলে বেশ উচ্ছসিতও তিনি। শুক্রবার রাজধানীর অদূরে পূবাইলের একটি শুটিং হাউসও চুড়ান্ত করে এসেছেন চয়নিকা। পূর্ণিমাও বেশ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন তার নির্দেশনায় কাজ করতে।
অনুরূপভাবে নির্মাতা হিসেবে শ্রাবণী ফেরদৌস এককভাবে কাজ শুরু করেছেন খুব বেশিদিন হয়নি। তবে ভিন্ন ধারার গল্প নিয়ে নাটক নির্মাণে তিনি বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। তার নাটকের প্রতি দর্শকের আলাদা গ্রহণযোগ্যতা আছে। পূর্ণিমা ও ইমনকে নিয়ে শ্রাবণী ফেরদৌস তার নিজের রচনায় নির্মাণ করতে যাচ্ছেন ‘মিসেস কুক’ নাটকটি।
চয়নিকা চৌধুরীর নাটকটি নির্মিত হবে চলতি মাসের ২৯ ও ৩০ এপ্রিল। শ্রাবণী ফেরদৌসের নাটকটির শুটিং হবে আগামী ৫ মে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি’র নির্বাচনের পরপরই। তবে রাজীবুল ইসলাম রাজীবের নাটকটির সিডিউল এখনো নির্ধারিত হয়নি। অনুরূপভাবে গল্পও চুড়ান্ত হয়নি। তবে পূর্ণিমা জানান, তিনি রাজীবের নাটকে কাজ করবেন।
এদিকে, ২০০৪ সালে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেছিলেন পূর্ণিমা। সে সময় সভাপতি হিসেবে সদ্যপ্রয়াত মিজু আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রয়াত নায়ক মান্না জয়লাভ করেছিলেন। ২০১৭ সালের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানের প্যানেল থেকে আবারো কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচন করছেন পূর্ণিমা।
নির্বাচন প্রসঙ্গে পূর্ণিমা বলেন, ‘এখনো নির্বাচন উপলক্ষে ভোটারদের কাছে ভোট চাইনি। দুই-একদিনের মধ্যে ভোট চাওয়া শুরু করব। আমার বিশ্বাস এবং আশা আমার সহকর্মীরা আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। আমার আরো বিশ্বাস আমাদের প্যানেলই জয়লাভ করবে, ইনশাল্লাহ।’
এরইমধ্যে রায়হান খানের রচনা ও নির্দেশনায় নোবেল ও মোশাররফ করিমের বিপরীতে ‘যখন সময় থমকে দাঁড়ায়’ নাটকে অভিনয় করেছেন পূর্ণিমা। এটি আসছে ঈদে আরটিভিতে প্রচার হবে।
উল্লেখ্য, জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পূর্ণিমার যাত্রা শুরু হয়। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিলো না’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে ২০১০ সালে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
পূর্ণিমা অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র হচ্ছে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’। এতে তার বিপরীতে ছিলেন আমিন খান, রিয়াজ। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন পরিচালক পূর্ণিমাকে নিয়ে নতুন নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন। সবকিছু ব্যাটে-বলে মিলে গেলে শিগগিরই নতুন চলচ্চিত্রে দেখা যাবে পূর্ণিমাকে।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ