Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
নিউজ ডেস্ক.
রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থী ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে বাংলাদেশ বিলম্ব করছে বলে অভিযোগ মিয়ানমারের। তাদের সন্দেহ, রোহিঙ্গাদের জন্য কোটি কোটি ডলারের আন্তর্জাতিক সহায়তা হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত ঢাকা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করবে না।
জাতিগত সহিংসতার কারণে গত আগস্ট থেকে বৌদ্ধ নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের কারণে আরও চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়ে আছে গত কয়েক দশক ধরে।
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর আউং সান সুচির মুখপাত্র জ তাই বলেছেন, মিয়ানমার যে কোনও সময় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত। ১৯৯০ সালের প্রথম দিকে করা প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে যে প্রস্তুত আছে, সে কথা আগেই জানানো হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনও সে প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।
জ তাই মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত। কিন্তু অপর পক্ষ এখনও প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। ফলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। এটিই প্রধান কারণ।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর জন্য অক্টোবরের শুরুতে ঢাকায় দুই দেশের বৈঠকে একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের সিদ্ধান্ত হওয়ার পর মাসের শেষ দিকে মিয়ানমারে যান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
সেখানে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে কফি আনান কমিশনের সুপারিশের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ ১০ দফা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। তবে পুরানো চুক্তি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।
রোহিঙ্গাদের জন্য শরণার্থী শিবির তৈরি করতে আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা পেতে বাংলাদেশ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে দেরি করছে বলে জ তাই ইঙ্গিত দেন। মিয়ানমারের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারে বুধবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি বলেছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ ৪০ কোটি ডলার পেয়েছে। তাদের এভাবে অর্থ পাওয়ার ফলে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আরও বিলম্বিত হবে বলে আমাদের আশঙ্কা। তারা আন্তর্জাতিক সহায়তা পাচ্ছে। আমাদের মনে হচ্ছে, তারা হয়ত প্রত্যাবাসনের বিষয়ে অন্য কিছু বিবেচনা করতে পারে।
বাংলাদেশ সরকার গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ওই দশ দফা প্রস্তাবের বিষয়ে মিয়ানমার এখনও সম্মতি দেয়নি। আসাদুজ্জামান গত শুক্রবার বাংলাদেশী সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, উভয় পক্ষ একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে ব্যর্থ হয়েছে। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ৩০ নভেম্বর আলোচনার জন্য মিয়ানমার গেলে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হতে পারে।
মিয়ানমার বলেছে, রোহিঙ্গাদের পরিচয় ও তাদের মিয়ানমারে বসবাসের তথ্য যাচাই হলেই তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে। জ তাই বলেছেন, তার দেশ এখন বাংলাদেশের তরফ থেকে রোহিঙ্গাদের তালিকার জন্য অপেক্ষা করছে।
১৯৯২ সালে মিয়ানমারের সামরিক সরকার শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে যে প্রত্যাবাসন চুক্তি করেছিল, তার আওতায় দুই লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৯ জন রোহিঙ্গাকে সে সময় ফিরিয়ে নিয়েছিল তারা। চুক্তি নির্ধারিত যাচাই প্রক্রিয়ায় আরও ২৪১৫ জন শরণার্থীকে ‘মিয়ানমার থেকে আসা’ বলে চিহ্নিত করা হলেও তাদের আর তারা ফিরিয়ে নেয়নি।
গত অগাস্টে রাখাইনে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনার মধ্যে মিয়ানমারের তরফ থেকে বলা হয়, ১৯৯২ সালের চুক্তির আওতায় ‘যাচাইয়ের মাধ্যমে’ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রাখাইনের মুসলমানদের ফিরিয়ে নিতে তারা প্রস্তুত। সূত্র: রয়টার্স