Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি.
জীবনের পাপ, তাপ, দুঃখ বেদনা মোচনসহ পূণ্যলাভের আশায় রাম নবমী উৎসব উপলক্ষে রবিবার ২৫মার্চ দিনব্যাপী বগুড়ার শেরপুরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৫১টি পীঠস্থানের অন্যতম ঐতিহাসিক মা ভবানীর মন্দিরে পূণ্যস্নান উৎসব উদযাপিত হয়েছে। এ উৎসবে মন্দির স্থলে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পূণ্যার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এ উৎসব শান্তিপূর্ণ করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয় ।
মা ভবানী মন্দিরের এই চিরাচরিত রাম নবমী তিথিতে পূণ্য স্নানসহ রতি প্রতিমা দর্শন, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, অর্ঘদান, মাতৃদর্শন ইত্যাদি কর্মযজ্ঞ নির্বিঘেœ সফল ও সুষ্ঠভাবে করার ভবানীপুর মন্দির সংস্কার, উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ডা. এনসি বাড়ই এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এ বছর এছাড়াও হিন্দুধর্মীয় কল্যান স্ট্রাস্টের ট্রাস্টি স্বপন কুমার রায়, ভবানীপুর মন্দির সংস্কার, উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সচিব কল্যান প্রসাদ পোদ্দার, সুব্রত কুমার দত্ত, সন্তোষ সাহা, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের বগুড়া শাখার সদস্য সচিব ভীম সরকার, শেরপুর উপজেলা শাখার সভাপতি প্রকাশ কুমার সরকার, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক দীপক সরকার, শেরপুর উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম কুন্ডু সহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, গনমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ উৎসব প্রসঙ্গে মা ভবানীপুর মন্দির সংস্কার, উন্নয়ন ও পরিচালনা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব কল্যাণ প্রসাদ পোদ্দার জানান, এবার ভারতের বেশ কিছু সহ দেশের দূরবর্তী জেলাগুলো থেকে পূণ্যার্থীরা এসেছে । এছাড়া এ উৎসবে প্রতিবারই প্রায় অর্ধলাখ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।
এদিকে, দিনটিকে ঘিরে সকাল থেকেই হাজার হাজার নারী-পুরুষ পূণ্যতা লাভের আশায় মন্দিরস্থলে সমবেত হন এবং শাঁখারী পুকুরে পূণ্যস্নান করেন।
পঞ্জিকা তিথি অনুযায়ী প্রতিবছর চৈত্র মাসে রাম নবমী তিথি এ পূণ্যস্থানে স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
ধর্মীয় শাস্ত্রমতে, রাম নবমী তিথির এ দিনে এ স্থানে অংশ নিলে তার অতীত জীবনের পাপ, তাপ, দুঃখ বেদনা মোচনসহ পূণ্যতা লাভ হয়। আর সেই আশায় হাজার হাজার ভক্ত নর-নারী ও শিশু কিশোর মন্দিরের শাঁখারী পুকুরে স্নান করেন। সেই সঙ্গে ঐতিহাসিক এই মন্দিরে রতি প্রতিমা দর্শন, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, অর্ঘদান, মাতৃদর্শন করেন ভক্তরা। মন্দিরের পক্ষ থেকে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
গত ২৪ মার্চ শনিবার রাত থেকেই তিথি অনুযায়ী মা ভবানীর মন্দিরে রাম নবমী উৎসবে যোগ দিতে পূণ্যার্থীরা আসতে থাকেন। এজন্য অসংখ্য দর্শনার্থী রাত যাপন করেন মন্দির এলাকা ও আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে ।
রাজশাহীর চারঘাট থানার খেতুরী ধাম এলাকা থেকে আসা স্বরসতী পাল, প্রেমতলীর লক্ষীরানী পাল বলেন, পূন্যস্থান ভবানীপুরে মা ভবানীর মায়ের দর্শন নিতে এখানে এসেছি। মনের আশা বাসনা পূরণের জন্য পূণ্য স্নান শেষে মায়ের কাছে প্রার্থনা করেছি।
প্রথমবারের নাটোরের বনপাড়া ভার্সিনাল গ্রামের ষাটোর্ধ পূণ্যর্থী সোনা চৌধুরী বলেন, এখানে এলে দেহ-মন পবিত্র হয়, তাই মায়ের মন্দিরে এসেছি। মন বাসনা পূরণ হবে-এমন আশা নিয়ে মায়ের মন্দিরে এসেছি বলে জানান ।
অপরদিকে এ তিথি উপলক্ষে প্রতিবছর মা ভবানী মন্দিরের চারপাশে মেলা বসে। এ মেলায় মুড়ি, মুড়কী, ঝুঁড়ি, মিষ্টান্ন, রকমারি খাবার সামগ্রীসহ মসলাদিও পাওয়া যায় । সেই সঙ্গে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, নাগরদোলা ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত বই পুস্তুক এ মেলায় পাওয়া যায়। তাছাড়া মেলায় পুণ্যার্থীদের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোটের শেরপুর শাখার উদ্যেগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও প্রাথমিক চিকিৎসাসহ ঔষধ বিতরণ করা হয়।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান উদযাপন করার সুবিধার্থে জেলা থেকে রিজার্ভ পুলিশ মোতায়েন করে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।