কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত সুনামগঞ্জ

নিউজ ডেস্ক.

অকাল বন্যার পর সুনামগঞ্জে এবার আঘাত হেনেছে কালবৈশাখী ঝড়। গতকাল রবিবার রাতে ঝড়ে সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার ঘরবাড়ি ও স্থাপনার ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের পর থেকে পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে সুনামগঞ্জের ওপর দিয়ে প্রচণ্ড বেগে ঝড় বয়ে যায়। প্রায় আধঘণ্টা স্থায়ী ঝড়ে মানুষের ঘরবাড়ি, বিভিন্ন স্থাপনা, গাছপালা, বিদ্যুতের লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগর, ঘোলঘর, নতুনপাড়া, নবীননগর, বড়পাড়া, তেঘরিয়া, আরপিননগর, মোহাম্মপুর, মাইজবাড়ি এলাকার আড়াই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। ভেঙে গেছে বাড়ির সীমানাপ্রাচীর, উপড়ে পড়েছে গাছপালা।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ঝড়ের আঘাতে আরো ২ শতাধিক বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে গেছে। ঝড়ে বসতঘরের টিন কয়েকশ’ গজ দূরে গিয়ে পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
হাছননগর এলাকার হোসেন মিয়া বলেন, ‘গত রাতের ঝড়ে আমরা ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমি যদি ঘরে না থাকতাম তাহলে আমার বউ ছেলেমেয়ে ঘরের নিচে চাপা পড়ত। আমি কোনোমতে তাদের নিয়ে অন্য জায়গায় যাই।’
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন জানান, তার উপজেলার সব ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তথ্য তিনি পাননি। তবে হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন।
ছাতক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বলেন, আমার এলাকায় মনে হচ্ছে ক্ষতি বেশি হয়েছে। চারদিক থেকে মানুষ ক্ষয়ক্ষতির কথা জানাচ্ছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।
সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সেলিম জানান, ছাতক-সুনামগঞ্জের ৩৩ কেভি লাইনের কয়েকটি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। এসব স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। শহরের ভেতরের অবস্থা আরও খারাপ। কখন বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা এই মুহূর্তে বলা মুশকিল।
ঝড়ে বিধ্বস্ত একাধিক এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাতে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে, এতে বেশ কিছু বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে গেছে। কিছুক্ষণ পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করব।’ ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি জানান।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ