Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820

শতাধিক ব্যক্তিকে চাকরি দেয়ার নামে অন্তত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুলতান মাহমুদ ধুনট উপজেলার সদরপাড়া গ্রামের মৃত আজিজার রহমানের ছেলে। তিনি ২০১৫ সালে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ নিয়ে রাজনীতি শুরু করেন। মাত্র দুই বছর পর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হন।
এরপর থেকে তিনি দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, তদবির, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। সবচেয়ে বেশি নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন সাবেক মন্ত্রী, এমপি, প্রশাসনিক ও বিভিন্ন অধিদফতরের কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে পুলিশ কনস্টেবল, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্বাস্থ্য বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা শুরু করেন।
তার প্রতারণা থেকে রাজনীতিবিদ, পুলিশ, আইনজীবী, শিক্ষক কেউ বাদ পড়েননি। টাকা হাতিয়ে নেয়ার সময় সুলতান মাহমুদ রূপালী ব্যাংক ধুনট শাখায় তার সঞ্চয়ী হিসাবের (নং-১৩৬) চেক দিয়েছেন। চাকরি দিতে না পারলে এক মাসের মধ্যে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে দেয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু তার ওই ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েন চাকরি প্রার্থীরা।
প্রতিবেদনটি দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে। ধুনট বার্তা’র পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি দৈনিক যুগান্তরের সৌজন্যে প্রকাশ করা হলো। পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে সংবাদটি পাঠ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
-ধুনট বার্তা
তার প্রতারণার শিকার বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি কোয়েল ইসলাম জানান, সুলতান মাহমুদ নিজেকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নাতনী জামাই পরিচয় দেন। তিনি তার (কোয়েল) মেয়ে জামাইকে অ্যাসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানিতে চাকরি দেয়ার নামে তিন বছর আগে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা নেন। বিশ্বাস স্থাপনে ব্যাংক চেক দিয়েছিলেন। চাকরি দিতে না পারলেও টাকা ফেরত দিতে তালবাহানা করেছেন। ফোন বন্ধ থাকায় তাকে বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে তিনি (সুলতান) ধুনট উপজেলার পারনাটাবাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল মোমিন মুকুলের ছেলে নাসিম উদ্দিনকে রূপালী ব্যাংকে চাকরি দেয়ার কথা বলে ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই ও ২০১৯ সালের ২৫ মে দুই দফা ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা নেন। তাকেও ব্যাংকের চেক দেয়া হয়েছিল। চাকরি ও টাকা না পেয়ে নাসিম উদ্দিন আদালতে মামলা করেন।
বিচারক তদন্ত করতে ধুনট থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২৮ জুন ধুনট থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। বর্তমানে সিআইডি বগুড়া ক্যাম্প তদন্ত করছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর সিআইডি সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু বক্কর সিদ্দিক ও এসআই এন্তেজারুল হকের স্বাক্ষরিত পত্রে রূপালী ব্যাংক ধুনট শাখাকে এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল কি না তার প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছে।
সুলতান মাহমুদের প্রতারণা শিকার শুধু কোয়েল ইসলাম ও নাসিম উদ্দিন নন; আরও অনেকে রয়েছেন। বগুড়ার অ্যাডভোকেট জাবেদ কাউসারের কাছে একই কায়দায় ছয় লাখ, মোস্তাফিজার রহমানের কাছে ১০ লাখ, আবদুস সাত্তারের কাছে ৩ লাখসহ শতাধিক মানুষের কাছে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ বলেন, চাকরি দেয়ার নামে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়েছেন। বিষয়টি তার পরিবারিক। তাই এ নিয়ে তিনি কথা বলতে রাজি নন।
রূপালী ব্যাংক ধুনট শাখা ব্যবস্থাপক শাহানুল হাসান বলেন, এ পর্যন্ত সুলতান মাহমুদের স্বাক্ষরিত অর্ধ কোটি টাকার প্রায় ১৫টি চেক ডিজঅনার হয়েছে। আরও অনেক ব্যক্তি চেক নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু তার হিসাবে কোনো টাকা না থাকায় কেউ টাকা তুলতে পারেননি। চেক জালিয়াতির ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
ধুনট থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, সুলতান মাহমুদ আগে সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং তিনি নেতার হওয়ার পর স্থানীয় এমপি হাবিবর রহমানের নাম ভেঙে চাকরি দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ১৮ লাখ টাকা নেয়ায় দুই ব্যক্তি আদালতে মামলা করেছেন। এ দুটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ফোন বন্ধ করে আত্মগোপন করায় তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।