অতিরিক্ত উপপরিচালক পদে পদায়ন হলেন ধুনটের কৃষি অফিসার


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820

    আমিনুল ইসলাম শ্রাবণ.

    বগুড়ার ধুনট উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে অতিরিক্ত উপপরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুশিয়া আক্তার গত ২৯ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। ধুনট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার দিপ্তী রানী রায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

    প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি উল্লেখ করেন ২৭তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ধুনট উপজেলা কৃষি অফিসার হিসেবে যোগদানের পর থেকেই তিনি ধুনট উপজেলার কৃষক ও কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের দোরগোড়ায় তিনি কৃষি সম্প্রসারণ সেবা পৌছে দিতে তিনি চালু করেছেন ‘ভ্রাম্যমান ডিজিটাল ফসল ক্লিনিক’। যার মাধ্যমে ফসলের রোগবালাই দমনে কৃষকদের কার্যকর পরামর্শ সেবা প্রদানের পাশাপাশি কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণেও এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে। এছাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্থাপন করেছেন ‘ডিজিটাল ফসল ক্লিনক’। যেখানে প্রতিদিন অসংখ্য কৃষক ফসলের চিকিৎসা সেবা গ্রহন করছে।

    কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম কৃষক ব্যবসা স্কুলের কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে কৃষকদের দ্বারা সম্মিলিতভাবে সবজি উৎপাদন এবং তা বিপননে উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রেখেছেন, যা সারাদেশে প্রশংসিত হয়েছে। নিরাপদ সবজি উৎপাদনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে তিনি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। নিজস্ব উদ্যোগে তিনি প্রায় সহ¯্রাধিক আগাম টমেটো চাষীর জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। তার বিশেষ উদ্যোগের কারণে ধুনটের টমেটো চাষীরা মৌসুমের শেষের দিকের টমেটো সচ তৈরীর কোম্পানীতের সরবরাহ করে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষক মাঠ স্কুল স্থাপনের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে কৃষকদের কাছে উন্নত কৃষি প্রযুক্তি পৌছে দিয়েছেন। ফলে প্রযুক্তি নির্ভর চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন বেড়েছে।

    ধুনট উপজেলার ১০০টি সিআইজি কৃষক সমবায় সমিতির সদস্যদের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে তাদেরকে সঞ্চয়ী হিসেবে গড়ে তুলেছেন এবং সঞ্চিত অর্থ আয় বৃদ্ধিমূলক কাজে বিনিয়োগের মাধ্যমে তাদের সাবলম্বী হতে সহায়তা করেছেন। তাঁর বিশেষ উদ্যোগের কারণে চরাঞ্চলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অনাবাদী জমি রবি মৌসুমে আবাদের আওতায় এসেছে। তিনি কৃষকদের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান, উদ্বুদ্ধকরণ সভা, মতবিনিময় সভা, কৃষক সমাবেশ, উঠান বৈঠক, আলোচনা সভা ও কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক ভিডিও চিত্র প্রদর্শন বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন ও প্রযুক্তি জ্ঞানে গড়ে তোলার জন্য অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেছেন। তার তৎপরতায় ধুনটে আউশ ধানের আবাদ প্রায় ৫০ হেক্টর থেকে ১৭৫০ হেক্টরে উন্নীত হয়েছে। বন্যা প্রবন এলাকায় জলমগ্নতা সহনশীল ব্রিধান- ৫১ ও ব্রিধান- ৫২ এর আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় শতভাগ জমিতে পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি পার্চিং সম্প্রসারিত হয়েছে। সবজি আবাদে ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহার এবং জৈব বালাইনাশক ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছি। সুষম মাত্রায় সারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় রাসায়নিক সারের ব্যবহার, বিশেষ করে ইউরিয়া সারের ব্যবহার হ্রাস পেয়েছে। তার নানামুখী উদ্যোগের কারনে অত্র উপজেলায় রবি মৌসুমে ভ‚ট্টা, ডাল, মসলা এবং তৈল জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। তার তৎপরতার কারনে ব্লক পর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠে থেকে কৃষকদের চাহিদা মাফিক সেবা প্রদান করেছেন।

    আদর্শ ক্ষুদ্র উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০১৭ সালে কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম কাইযেন ন্যাশনাল এওয়ার্ড অর্জন করেছেন। তিনি একজন সুদক্ষ উপজেলা কৃষি অফিসার। তিনি ধুনট উপজেলাকে কৃষি প্রযুক্তি ও কৃষি সেবা সম্প্রসারণের একটি মডেল উপজেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

    উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ধুনট বার্তাকে বলেছেন, ধুনট উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই এ কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়নে আন্তরিক ভাবে কাজ করেছি। সহকর্মীদের সহযোগিতায় কৃষি সম্প্রসারণ সেবায় ধুনট উপজেলাকে মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। ধুনটের কৃষকদের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে কাজ করেছি। তিনি বলেন, মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে যোগদান করবো। তিনি ধুনটবাসীর নিকট নিজের জন্য দোয়া কামনা করেছেন।


    অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ