আমিনুল ইসলাম শ্রাবণ.
বগুড়ার ধুনট উপজেলার রাঙ্গামাটি গ্রামে নববধূ রেহেনা খাতুনকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তার স্বামী আলিফ হাসান। মাদকসেবনের প্রতিবাদ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দায় স্বীকার করেছে আলিফ। শনিবার বিকেলে বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোমিন হাসান এর নিকট সে হত্যাকান্ডের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করেছে।
এরআগে শুক্রবার দুপুরে আলিফ হাসানের রাঙ্গামাটি গ্রামের বাড়ি থেকে নববধূ রেহেনা খাতুন (১৮) মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে নিহত রেহেনার বাবা রেজাউল করিম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় পুলিশ আলিফ হাসানকে গ্রেফতার করে।
মামলা, থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলিফ হাসান উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি গ্রামের মুঞ্জুরুল আলমের ছেলে। সে পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রী। প্রায় দুই মাস আগে শেরপুর উপজেলার সুঘাট গ্রামের রেজাউল করিমের মেয়ে রেহেনা খাতুনকে বিয়ে করেন আলিফ।
বৃহস্পতিবার রাতে স্বামী-স্ত্রী শোবার ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। শুক্রবার সকালের দিকে স্বামীর বিছানায় রেহেনা খাতুনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সংবাদ পেয়ে শুক্রবার দুপুরের দিকে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। সন্ধ্যার দিকে মৃতদেহের ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়না তদন্ত শেষে রাতেই নিহতের বাবার পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা রেজাউল করিম বাদী হয়ে আলিফ হাসান ও তার বাবা মুঞ্জুরুল আলমকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
এঘটনায় আলিফ হাসানকে গ্রেফতার করে ধুনট থানা পুলিশ। পরে ধুনট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল হকের তৎপরতায় প্রাথমিক ভাবে হত্যার দায় স্বীকার করে আলিফ হাসান। আজ শনিবার দুপুরে তাঁকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট মোমিন হাসানের নিকট আলিফ হাসান হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়।
ধুনট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল হক বলেন, নিহত রেহেনার গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার বাবার দায়েরকৃত মামলায় আলিফ হাসানকে গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করি। পরে তাকে আজ বগুড়ার আদালতে হাজির করলে সে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আলিফ হাসানের জবানবন্দীর বরাত দিয়ে ধুনট বার্তাকে পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল হক জানান, আলিফ হাসান একজন মাদকসেবী। বিষয়টি জানতে পেরে রেহেনা খাতুন মাদকসেবনের প্রতিবাদ করেন। বিষয়টি নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হয়। এদিকে মাদকসেবন নিয়ে নববধূর মুখে গালিগালাজ শুনে ক্ষুব্ধ হয় আলিফ। রাতে রেহেনা খাতুন ঘুমিয়ে গেলে তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আলিফ।