‘আ. লীগ নেতারা কি জনগণকে কাঁচকলার রাজনীতি শেখাচ্ছেন?’

নিউজ ডেস্ক.

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন করে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতারা কি জনগণকে কাঁচকলার রাজনীতি শেখাচ্ছেন?’
মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রিজভী।
সোহরাওয়ার্দীতে উদ্যানে সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, রাজধানীতে সমাবেশ করতে দেওয়ার ক্ষমতা ডিএমপির। তাদের নেতা কি জনগণকে কাঁচকলার রাজনীতি শেখাচ্ছেন? জনগণ মনে হয় কিছুই বোঝে না। ডিএমপির কাজ হচ্ছে অপরাধ দমন, গণতন্ত্রে বিরোধী দলের অধিকার দমন নয়। আমরা বলতে চাই, ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য যদি সঠিক হয়, তাহলে বুঝতে হবে গণতন্ত্রের পায়ে পুলিশ বেড়ি দিয়ে রেখেছে। যখন দেশব্যাপী অপরাধীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তখন সরকার ডিএমপিকে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার দমনে ব্যবহার করছে। ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছা বাস্তবায়নের যন্ত্রে পরিণত করা হয়েছে ডিএমপি তথা পুলিশ বাহিনীকে। কাদের ইঙ্গিতে ডিএমপি বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেয়নি, সেটি আওয়ামী নেতারা না বুঝলেও জনগণ ঠিকই বোঝে।
বিএনপিকে অনুমতি না দিলেও ক্ষমতাসীন দল ঠিকই রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহারের মাধ‌্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে সোহরাওয়ার্দী উদ‌্যানে সমাবেশ করছে বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কয়েকদিন আগে এরশাদের জাতীয় পার্টি প্রায় ৫০টি হাতি ও ঘোড়া নিয়ে সমাবেশ করেছে। আর আওয়ামী লীগ রাজধানীতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে অহরহ সমাবেশ করছে। আজকেও তাদের সমাবেশের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষণা দিয়ে ঢাকা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পথ-ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের সমাবেশের জন্য পুলিশকে এখন পারসোনাল সিকিউরিটিতে পরিণত করা হয়েছে।
৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত‌্যা দিবস’ হিসেবে পালনে ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে সাড়া পায়নি বিএনপি। দিনটিতে ধানমণ্ডির রাসেল স্কয়ারে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এবং বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সমাবেশ হয়। এছাড়া ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকালে সোহরাওয়ার্দীতে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সারাদেশে জেলা-উপজেলায় সরকারের দলবাজ কর্মকর্তা ও প্রশাসনের লোকজন দিয়ে ‘উন্নয়ন মেলা’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। এ মেলাকে পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খানের উন্নয়ন মেলার সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, আইয়ুব খানের আমলে স্কুলে স্কুলে উন্নয়নের দশক পালন করা হতো। সেই কথাটা এখন মনে পড়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের উন্নয়নের গণতন্ত্রের মেলার নামে। সামরিক শাসক আইয়ুব খানও ১৯৬৮ সালে উন্নয়ন দশকের উৎসব করেছিলেন। তাতে তার শেষ রক্ষা হয়নি, গণঅভ্যুত্থানের স্রোতে ভেসে যেতে হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে শহীদ জিয়ার নাম বাদ দিতেই পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার নাম বদলে দিয়েছে সরকার।
সংবাদ সম্মেলনের অন‌্যদের মধ্যে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মালেকপ্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ