পাকিস্তান না এলে বিকল্প সিরিজ!

ক্রীড়া ডেস্ক.

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরপরই বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে আসার কথা ছিল পাকিস্তানের। ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের (এফটিপি) নির্ধারিত সফর হওয়া সত্ত্বেও গত মাসে হুট করে তা স্থগিতের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। ঠিক কী কারণে সফরটি স্থগিত করা হয়েছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) তার কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা এখনো দেয়নি পিসিবি। এরপরও পাকিস্তানকে সফরসূচি পাঠিয়েছিল বিসিবি, তাতেও কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। পিসিবির এ মৌনতাকে সম্মতি নয়, বরং নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখছে বিসিবি। তাই পাকিস্তান সিরিজকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক এ সংস্থা।
পাকিস্তান সিরিজকে বাতিলের খাতায় ফেলে দেয়া প্রসঙ্গে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আমরা পিসিবিকে সূচি পাঠিয়েছি। কিন্তু তারা এখনো আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা ধরে নিচ্ছি তারা আসবে না।’ পাকিস্তানের বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো দলের সঙ্গে সিরিজ আয়োজন করা যায় কিনা আপাতত সেই পথ খুঁজছে বিসিবি। তবে সেক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পাপন, ‘ওই সময়ে অন্য কোনো দলের সঙ্গে সিরিজ আয়োজন করা যায় কিনা, সেটা নিয়ে আমরা ভাবছি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলাকালীন ইংল্যান্ড গিয়ে ক্রিকেটারদের সঙ্গেও আলোচনা করব। ওরা কি চাচ্ছে— সিরিজ খেলতে চায়, নাকি বিশ্রাম। এরপর সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়া ওই সময়ে অন্য দলগুলোর ব্যস্ত শিডিউল থাকবে। সব দিক বিবেচনা করেই এগোনো হবে।’
এ মুহূর্তে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে আয়ারল্যান্ডে অবস্থান করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বুধবার ডাবলিনের ক্লোনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এ ম্যাচ দিয়ে আবারো মাঠে ফিরতে যাচ্ছেন নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সর্বশেষ শ্রীলংকা সিরিজে শেষ দুটি ওয়ানডেতে স্লো ওভার রেটের জন্য এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার শাস্তি পান মাশরাফি। আর তাই ১২ মে ত্রিদেশীয় সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দলের নেতৃত্বভার পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। যদিও বৃষ্টি কারণে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়।
ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নিতে ইংল্যান্ড যাবে বাংলাদেশ দল। ২০০৬ সালের পর প্রথমবারের মতো এ টুর্নামেন্টের মূলপর্বে দেখা যাবে বাংলাদেশকে। এরপর জুলাই-আগস্টে দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে এবং একটি টি২০ ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল পাকিস্তানের। তাছাড়া পাকিস্তান সিরিজের পর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দুটি টেস্ট ম্যাচও খেলবে টাইগাররা। সব মিলিয়ে পাঁচ মাসের ব্যস্ত সূচি।
দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের অনেকেই বোর্ডপ্রধানকে জানিয়েছেন, কয়েক মাস ধরে টানা খেলার মধ্যে আছেন তারা। একটু বিশ্রাম প্রয়োজন। খেলোয়াড়দের এ দাবি আমলে রেখেছেন পাপন। এ প্রসঙ্গে বোর্ডপ্রধানের ভাষ্য, ‘এ মুহূর্তে ছেলেরা খুব ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। একমুহূর্ত দম ফেলার সময় নেই। তাই দলের সঙ্গে আগে কথা বলতে হবে। আমি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দেখতে যাব এ মাসের শেষে। তখন গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলব।’
সিরিজ খেলতে পাকিস্তান যদি না আসে, তাহলে অন্য কোনো দল নিয়ে বিসিবির পরিকল্পনা আছে কিনা— এ প্রসঙ্গে কোনো সুস্পষ্ট তথ্য দেননি বিসিবি সভাপতি পাপন। তিনি জানান, বিষয়টি নির্ভর করছে ক্রিকেটার ও কোচের ওপর। তাদের অনেকেই বোর্ড সভাপতিকে ছুটির জন্য অনুরোধ করেছেন। এ প্রসঙ্গে বোর্ড সভাপতি বলেছেন, ‘ওদের অনেকেই জানিয়েছে, খেলা খুব বেশি পড়ে যাচ্ছে। তারা পরিশ্রান্ত। ছুটি পাচ্ছে না। বিশ্রাম হচ্ছে না। বিশ্রাম দরকার। তাই ওদের সঙ্গে কথা বলেই ঠিক করব, বিকল্প সিরিজ আয়োজন করব কি করব না।’

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ