বগুড়ার শেরপুরে গত সোমবার রাতে কাল বৈশাখী ঝড়ে উপজেলার পৌরশহরসহ ১০ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ৩ শতাধিক বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মন্দির, শ্বশ্মান, কৃষি ফসল, গাছপালা সহ বিদ্যুতের লাইনের খুঁটি তছনছ হয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এ সময় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, গত সোমবার (১৫ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে কাল বৈশাখী ঝড় শুরু হয়। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী ঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য গাড়িদহ ইউনিয়নের কাফুরা, রনবীরবালা, ফুলবাড়ী, বৃন্দাবনপাড়া, মহিপুর নতুনপাড়া, খানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর, খামারকান্দি ইউনিয়নের শুভগাছা, হুসনাবাদ, ঝাঁজর, খামারকান্দি, পৌরশহরের গোসাইপাড়া, ঘোষপাড়া, উত্তরসাহাপাড়া, দক্ষিনসাহাপাড়া, স্যান্নালপাড়া, হাটখোলা, পৌরকাচারী, উত্তরবাহিনী মহাশ্বশ্মান, খানপুরের হোসনাবাদ, গোপালপুর এলাকা সহ শতাধিক গ্রামের তিনশতাধিক বাড়িঘর, কৃষি জমির সবজীর জানালা ও আবাদী ফসল, গাছপালা তছনছ হয়ে যায়, বিশেষ করে পৌরশহরের চায়না তম্বুলি ও কানন তাম্বুলির বাড়ির উপর বড় গাছ উপরে পরে বাড়ি দুটি একেবাড়েই চ্যাপ্টা হয়ে গেছে।
প্রচন্ড ঝড়ে বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভাংচুর ও লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওযার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দোকানের উপরে গাছ উপরে পড়ায় তাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়। তাছাড়া উপজেলার বৃন্দানপাড়ার উজ্জল রাজবংশী, পৌর এলাকার বাসুদেব, জয়, সুমা রানী, কাফুড়ার সালেম, সাইদুল, আব্দুল আমিল, ফজলুল হক, খোকন, গোপালপুর গ্রামের আব্দুস সালাম, সাহেব আলী, চায়না তাম্বুলি, কানন তাম্বুলি, তরনী রানী, অঞ্জনা, নার্গিস, জিতেন্দ্র নাথ সহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে চায়না ও কানন তাম্বুলি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এই ঝড়ে উপজেলার কাফুড়া গ্রামের সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম শরীফের বাড়ি, বৃন্দাবনপাড়ার কালি মন্দির, উজ্জল রাজবংশী’র বাড়ি, কাফুড়া বালিকা মাদ্রাসা, পৌরশহরের চায়না তম্বুলি ও কানন তাম্বুলির বাড়ি, উত্তরবাহিনী মহাশ্বশ্মান ও হাটখোলার পুরানো বেশ কয়েকটি বটগাছ, বিভিন্ন এলাকার গাছপালা, শেরপুর-ধুনট সড়কের রনবীরবালা থেকে শুবলী পর্যন্ত শতাধিক গাছ উপরে তছনছ হয়ে যায়। সড়ক সচল করতে ঝড় পরবর্তী সময়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের শেরপুর ও বগুড়া ইউনিটের কর্মীরা ভোররাত পর্যন্ত গাছগুলো অপসারন করে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান বলেন, গত সোমবারের ঝড়ে উপজেলার ৮০ থেকে ৯০ হেক্টর মৌসুমী সবজির ক্ষেত আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলার কৃষি, পিডিবি, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে গত সোমবারের ঝড়ে সবমিলিয়ে প্রায় ৫কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয় বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামসুন্নাহার শিউলি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধণ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রনয়নের কাজ মাঠ পর্যায়ে শুরু করা হয়েছে। তবে সবমিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা যাচ্ছে।