আ’লীগ সরকার আজ দেশকে কারাঘরে পরিনত করেছে : ফখরুল

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাটে থেকে.

বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যে দেশের প্রধান বিচারপতি যখন বলেন দেশে আইনের শাসন নেই, তখন বলার অপেক্ষা থাকে না দেশের অবস্থা কোথায় ? আ’লীগ সরকার আজ গোটা দেশকে কারাগারে পরিনত করেছে।
তিস্তা নদীর পানির কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত গিয়ে পানি আনতে পারে নাই। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণেই তিস্তার পানি চুক্তি হয়নি। আজ অভিন্ন ৫৪ টি নদীতে পানি নেই।
তিনি বৃহস্পতিবার লালমনিরহাট জেলা বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা গুলো বলেন।
লালমনিরহাট জেলা পরিষদ হল রুমে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাব্বি দুলুর সভাপতিত্বে উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, তাতীদলের সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, মহিলাদলের সম্পাদিকা সুলতানা আহেম্মদ, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মাও ঃ আব্দুল মালেক, ওলামা দলের সম্পাদক মাও ঃ নেছারুল হক, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ন-সম্পাদক হেলেন জেলেন খান, জিয়া পরিষদের ভাইচ চেয়ারম্যান ডাঃ মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল।
বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র কুটিশিল্প বিষয়ক সম্পাদক মোজাফর হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপি’র সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা প্রমুখ।
তিনি বলেন, বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য নয়, দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরে দিতে বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়। তবে সেই নির্বাচন হতে হবে নিরোপক্ষ সরকারের অধীনে। তাই আমাদের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে আনতে হবে। আমরা চাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। দেশের প্রত্যেকটা মানুষের চোখে-মুখে আজ বিদ্রোহের ভাষা দেখতে পাওয়া যায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে খারাপ সময় চলছে। কারণ এ আ’লীগ সরকার গণতন্ত্রের একটা মুখোশ পড়ে আছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে যত দূর্নীতি হয়েছে তার সিংহভাগ এই আ’লীগ সরকারের আমলেই। দেশে বর্তমানে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা চলছে। শুধু একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বললে ভুল হবে এক ব্যক্তির শাসন ব্যবস্থা। এখানে মানবাধিকার বলতে কিছু নেই, জবাবদিহিতাও নেই। নামে মাত্র একটা সংসদ আছে যেখানে জনগণের সমস্যা সমাধানের কোনো আলোচনা করা হয় না। যে সংসদে বিরোধী দল আছে যাকে সবাই বলে গৃহপালিত বিরোধী দল। তারা জলসা পার্টির দর্শক হয়ে শুধু হাতে তালি দেন। বিএনপি এই আ’লীগ সরকারের দূঃশাসনক পরাজিত করে একটি শান্তিময় দেশ গঠন করতে চায়।
বিএনপি’র মহাসচিব বলেন, অধিকার হরণ করবার একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গোটা দেশের মানুষ বলতে গেলে কারাগার তৈরী হয়ে গেছে এ থেকে মুক্তি পেতে হবে। স্বাধীনভাবে কথা বলবার, সব কিছুর ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের পদ-পদবীর জন্য নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য, গণতন্ত্রের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, মা-বোনদের সম্মানের জন্যে আওয়ামী লীগ সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার ব্যবস্থা করতে হবে। কারন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলছে তারা।
সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে তল্লাশির নামে যে আক্রমন করা হলো সেটা কার্যালয়ের উপর আক্রমণ নয়, এটা গণন্ত্রের উপর আক্রমন দেশের মানুষের আক্রমণ। আগেই বলেছি এটা গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত। দেশে রাজনৈতিক নতুন সংস্কৃতির ধারা তৈরি করার প্রস্ততি চলছিল এটাকে ধ্বংস করে দেওয়ার সরকার এই কাজটি করেছে।
সম্মেলনে বক্তরা বলেন, খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের তল্লাশি প্রতিবাদে সারাদেশের মানুষ মুখর হয়ে উঠেছে। সেখান থেকে শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার অনুমতি চেয়েছিলাম। সরকার অনুমতি দেয়নি। বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশি ও হামলা সরকারের নির্দেশেই হয়েছে। যে কারণে সরকারের নির্দেশেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি মেলেনি।
সম্মেলনে বক্তরা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাংক লুট করে খাচ্ছে, শেয়ার মার্কেট লুট করেছে। সমন্ত উন্নয়নের কথা বলে উন্নয়নের প্রকল্পে টাকা লুট করে নিচ্ছে। উন্নয়নের নামে শুধু সংখ্যার জালিয়াতি ছাড়া আর কিছুই করছেনা তারা। দেশে আজ বিদ্যুৎ নেই, বাড়ছে শুধু দাম। সাধারণ মানুষের হা-হা কার উঠে গেছে। এই অবস্থা থেকে আমাদের পরিত্রাণ পেতে হবে। আর এই পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ