পাঠাভ্যাস উন্নয়নে বরিশাল বিভাগীয় সেরা সংগঠক সম্মাননা প্রদান

 

বরিশাল প্রতিনিধি.


বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলার ২৪টি উপজেলায় ১হাজার ৪৯৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠাভ্যাস উন্নয়নে সেরা সংগঠকদের সন্মাননা প্রদান করা হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টায় বরিশাল পুলিশ লাইনের কনফারেন্স রুমে সন্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। ১৪৯ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির সংগঠক ‌‌’সেরা সংগঠক সম্মাননা পুরস্কার-২০১৬’ পেয়েছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শহিদুজ্জামান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), মোঃ আবুল কালাম তালুকদার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস, উপ-প্রকল্প পরিচালক (সেকায়েপ) মোঃ মুস্তাফিজর রহমান, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আনোয়ার হোসেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেকায়েপ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ মাহামুদ-উল-হক । এছাড়া পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসুচি’র উপসচিব ও কো-টিম লিডার শরিফ মোঃ মাসুদ, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসুচি কো-টিম লিডার জনাব শরিফ মোঃ মাসুদ বলেন, ২০১৭ সালে সারা দেশে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির ২১ লক্ষ ৭০ হাজার পাঠক হয়েছে। ২০৪১ সালের যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখছেন সেই উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষারও উন্নতি প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দসহ সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং সেরা সংগঠকগণকে তিনি অভিনন্দন জানান।

স্বাগত বক্তব্যের পর সেরা সংগঠকদের মধ্য থেকে দুই জন সেরা সংগঠক পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতা ও ভূমিকা বর্ণনা করেন। বই পড়ার অভ্যাসের কারণে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ার মান বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে সংগঠকদ্বয় এই কার্যক্রমকে সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানান। মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের মতো মাদ্রাসাগুলোতে লাইব্রেরিয়ান পদ সৃষ্টি করার জন্য সরকারের নিকট তারা আবেদন তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শহিদুজ্জামান বলেন, বইপড়ার গুরুত্ব ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সেকায়েপ প্রকল্পের এ ধরণের কর্মসূচি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো বলেন, তার শৈশবে এমন সুযোগ ছিল না, সরকার যে সুযোগ সৃষ্টি করেছে সেই সুযোগকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। বিশেষ করে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির এই কার্যক্রমকে সফল এবং সার্থক করে তোলার জন্য তিনি উপস্থিত শিক্ষকদের আরো আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য আহবান জানান।

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন মোঃ আবুল কালাম তালুকদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস, পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, বরিশাল অঞ্চল, জনাব মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান, উপ-প্রকল্প পরিচালক, সেকায়েপ এবং জনাব মোঃ আনোয়ার হোসেন জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল।

সভাপতির বক্তব্যে সেকায়েপ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ মাহামুদ-উল-হক বলেন, সেকায়েপ প্রকল্পের একটি অন্যতম উদ্যোগ বইপড়া কর্মসূচি। মানুষকে বড় হতে হলে তাকে বই পড়তেই হবে । বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্দেশ্য জীবনকে আলোকিত ও বিকশিত করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরি উন্নয়নের জন্য আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের জন্য সেকায়েপ প্রকল্প নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের ২৫০টি উপজেলার প্রায় ১২ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বইপড়া কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সেরা সংগঠক সম্মননা পুরস্কার প্রাপ্ত সংগঠদের এই অর্জনের জন্য তিনি উপস্থিত সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।


বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরে পঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির সংগঠকদের সমন্বয়ে ‘সেরা সংগঠক সম্মাননা পুরস্কার-২০১৬ প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। সারা দেশে মোট ১১৮৪ জন সেরা সংগঠক সম্মাননা পুরস্কারের জন্য মনোনিত হয়েছেন। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি কার্যক্রম সচল ও নিয়মিত রাখার জন্য বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র কাজ করছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের তত্বাবধানে এ কর্মসূচির আওতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বই পড়ানোর কাজে সংগঠক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক অথবা লাইব্রেরিয়ান। প্রত্যেক বছর লাইব্রেরিয়ানদের কার্যক্রমে গতিশীলতা ও উদ্দীপনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকল্প থেকে প্রতিটি উপজেলার ১০% শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরিয়ান/সংগঠকদের সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ