পাখির কলতানে মুখর বাইশা বিল

আমিনুল ইসলাম শ্রাবণ.

দেশী ও পরিযায়ী পাখির কলতানে মুখর বগুড়ার ধুনট উপজেলার বাইশা বিল। চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের জালশুকা, কুমিরিয়া ডাঙ্গা, চাঁনদিয়াড়, চালাপাড়া ও পেঁচিবাড়ী গ্রামের মাঝে এ বিলের অবস্থান। প্রায় ২৫০ বিঘা আয়তনের এ বিল ঘিরে রয়েছে প্রাকৃতিক নৈসর্গিক পরিবেশ। বছর জুড়ে এ বিলে দেখা মেলে দেশী ও পরিযায়ী নানা জাতের পাখি। এ যেন পাখির নিরাপদ আবাস। উপজেলার জালশুকা গ্রামে সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাবিবর রহমানের বাড়ী। ওই বাড়ীর পূর্ব পাশে বাইশা বিল। বিলের দক্ষিণ তীরে রয়েছে বিভিন্ন জাতের গাছের বাগান। সবুজ ছায়া ঘেরা নৈসর্গিক পরিবেশ যুগ যুগ ধরে পাখির অভয় অরন্য হিসেবে পরিচিত। সংসদ সদস্যের নির্দেশে দীর্ঘদিন যাবত এখানে পাখি শিকার নিষিদ্ধ রয়েছে। এ কারনে দিনে দিনে পাখির নিরাপদ আবাস হিসেবে গড়ে উঠেছে বাইশা বিল। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খাবারের সন্ধানে বাইশা বিলে আসে নানা প্রজাতির পাখি। এখানে শিকার বন্ধ থাকায় পাখিরা নিরাপদ। শীতকালে অতিথি পাখির মেলা বসতো। কিন্তু সম্প্রতি বছর জুড়ে এখানে  দেশীয় ও অতিথি পাখির দেখা মেলে। বিশেষ করে সন্ধ্যা ঘনালে বিলে আসে চোখা পাখি। তবে ভোরের সূর্যোদয়ের আগেই চলে যায়।  এছাড়া বালি হাঁস, জলপিপি, বিভিন্ন জাতের বকসহ নানা জাতের হাজারো পাখির রয়েছে। মাঝে মাঝে দূর্লভ পেলিকোনের দেখাও মেলে। প্রতিদিনই পাখি প্রিয় অসংখ্য মানুষের ভিড় জমে বিলের ধারে। সবুজ শ্যামল পরিবেশে পাখির কিচিরমিচির শব্দ, খুঁনসুটি, ঝাঁক বেঁধে উড়ে চলা, জলকেলি বাইশা বিলে আসা মানুষের হৃদয় জুড়িয়ে দেয়। সম্প্রতি বিলটি বাবু পার্ক সিটি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান এ পার্ক ঘিরে মুলত প্রকৃতি ও পাখির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কারনে প্রতিবছর বাঙ্গালীর বর্ষবরনের উৎসব ঘিরে মেলা বসে বাবু পার্ক সিটিতে। মেলায় বাঙ্গালীর সংস্কৃতি ঘিরে থাকে নানা আয়োজন। এছাড়া দেশের খ্যাতিমান শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন মেলার মঞ্চে। তবে মেলা ছাড়াও নানা উৎসবে বাইশা বিলে মানুষের ভিড় জমে। বাইশা বিলে ঘুরতে আসা কলেজ ছাত্রী মোসলেমা খাতুন জানান, পার্ক হলেও এখানে কৃত্তিম কিছু নেই। সবুজ গাছের ছায়া ঘেরা পরিবেশ, বিল ঘিরে পাখির ডানা মেলার দৃশ্য ভাল লেগেছে। এখানে আসলে মন জুড়িয়ে যায়। এজন্যই বার বার আসি। সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান বলেন, কয়েক যুগ ধরে বাইশা বিলে নানা জাতের পাখি আসে খাদ্যের সন্ধানে। এখানে পাখি শিকার বন্ধ করে দেওয়ায় দিনে দিনে পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বছরের সব সমই দেশী ও অতিথি পাখির দেখা  পাওয়া যায়। পাখির আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে বাইশা বিলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে পাখির অভয় আশ্রম গড়তে সরকারী উদ্যোগ প্রয়োজন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাবু পার্ক সিটি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক নৈসর্গিক পরিবেশ আর পাখির সঙ্গে মানুষের সখ্যতা গড়ে তোলা। পাখির প্রতি মানুষের ভালবাসা সৃষ্টি করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য পার্কে প্রবেশের বিষয়টি সবার জন্য উন্মুক্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ