Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/dhunatbarta.net/public_html/wp-content/plugins/social-share-with-floating-bar/social-share-with-floating-bar.php on line 820
নিউজ ডেস্ক.
সরকারের হিসাবে দেশে বর্তমানে ৪ শতাংশ মানুষ কর্মহীন বা বেকার। সরকারের এ হিসাব অগ্রহণযোগ্য। প্রকৃত হিসাবে দেশে বেকারের হার ৩২ থেকে ৩৫ শতাংশ। যা ১৯১৩ সালে আমেরিকার বেকারের ২০ শতাংশ হারকে ছাড়িয়ে গেছে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান শনিবার হোটেল লেকশোরে আয়োজিত ‘বাজেট সংলাপ ২০১৭’ শীর্ষক সেমিনারে এ সব কথা বলেন।
আকবর আলী খান বলেন, ‘সরকারের হিসাব মতে আমাদের দেশে ৪ শতাংশ মানুষ বেকার। যা প্রকৃত অর্থে অগ্রহণযোগ্য। কারণ, বেকার সংখ্যার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশে অনেক মানুষ আছে যারা যথাযথ কর্মসংস্থানের অভাবে অত্যন্ত নিম্নমানের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। যা মূলত বেকারত্বের মতোই। এই সংখ্যা যদি যোগ করা হয় তাহলে দেশে বেকার সংখ্যা ৩২ থেকে ৩৫ শতাংশ হবে।
তিনি বলেন, ১৯১৩ সালে আমেরিকায় যখন বেকারের হারে ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল তখন তারা বড় ধরনের অবক্ষয়ের মুখোমুখি হয়েছিল। আমাদের দেশেও বর্তমানে বেকার সমস্যা উদ্বেগের বিষয়। এ জন্য প্রকৃত সমস্যা চিহ্নিত করে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর একসঙ্গে কাজ করা উচিত।
দেশে কার্যকর বিরোধী দল নেই দাবি করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি এসময় বলেন, ‘বেশ বিছু দিন যাবত সংসদে কার্যকর কোনো বিরোধী দল নেই। আর এজন্য বাজেট নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয় না। অর্থমন্ত্রণালয় বাজেট তৈরি করে আর প্রধানমন্ত্রী সেটা দেখে দেন।’ বাজেটের দুর্বলতা নিয়ে সংসদে আলোচনা হওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
ভ্যাট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সিপিডির সঙ্গে আমি একমত এই অর্থে যে, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বেশি হয়ে যায়। ভ্যাট ব্যবস্থায় দলিল রেখে রিবেট নেওয়ার যে সুযোগ রাখা হয়েছে সে বিষয়ে আমি সন্দিহান। কারণ, এখনো আমদের দেশে অশিক্ষিত বা অল্পশিক্ষিত মানুষই বেশি। যেমন, বিদ্যুতের মতো পণ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হলে গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়বে। যার নেতিবাচক প্রভাব সকলকে নিতে হবে।’
আকবর আলি খান প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘রেলযোগাযোগের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে কিন্তু স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তা হয়নি কেন। স্বাস্থ্যের জন্যতো আমাদের আলাদা চয়েজ নেই। এখানেতো অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু রেলে না গিয়ে সড়কপথে যাওয়া যায়, নদীপথে যাওয়া যায়।’
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমাদের কোয়ালিটি শিক্ষা দিতে হবে। বিশেষ করে টেকনিক্যাল শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা উন্নতি করতে হবে।’
কৃষিক্ষেত্রে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানের তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় কৃষক ন্যায্য দাম পায় না। তাদের জন্য আমাদেরকে প্রণোদনা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, বাজেটে অর্থমন্ত্রী ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন। এটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে, কতুটুকু অর্জন করা সম্ভব হবে। তবে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি ও ৫ শতাংশের নিচে মুদ্রাস্ফীতি রাখা অভিনন্দনযোগ্য।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বড় বাজেটকে সব সময় স্বাগত জানাই। কিন্তু আমার দৃষ্টি হচ্ছে বাজেট বাস্তবায়নে রাজস্ব সংগ্রহে সরকার বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কতটুকু দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে।’
আকবর আলি খান বলেন, ‘আমরা বিদেশিদের কাছে এনার্জিনির্ভর হয়ে যাচ্ছি। এটা আমাদের তিন থেকে চার বছর পর সমস্যা হিসেবে দেখা দেবে। আমাদের নিজস্ব গ্যাস উত্তোলন করতে হবে। নিজেদের এনার্জি উৎপাদনের দিকে জোর দিতে হবে।’
কালো টাকা প্রসঙ্গে আকবর আলী খান বলেন, ‘বছরের পর বছর অব্যাহতভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়টির ক্ষেত্রে সরকারের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। রেমিট্যান্সের প্রভাব কমে যাওয়া দেশের জন্য বড় একটি সমস্যা। বর্তমানে কাতার নিয়ে নতুন করে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এতে রেমিট্যান্স আরো কমতে পারে। এটা আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়।’
স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিড) এ সেমিনারের আয়োজন করে। বাজেট আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান প্রমুখ।