সেই দানা মাঝি এখন বিরাট ধনী

নিউজ ডেস্ক.



দানা মাঝির কথা মনে আছে? স্ত্রীর লাশ কাঁধে নিয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দেয়া ভারতের সেই হতদরিদ্র দানা মাঝি। তবে বছর না ঘুরতেই সেই দরিদ্র মানুষটি এখন বিরাট ধনী।

২০১৬ সালের অগস্ট মাসে সারা দুনিয়ায় সাড়া ফেলেছিল হতভাগ্য এক স্বামীর মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি। ওড়িশার কালাহান্ডি জেলার বাসিন্দা দরিদ্র দানা মাঝি স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন সেই সময়ই। দুর্ভাগ্যের সেখানেই শেষ নয়। মৃত স্ত্রীর দেহ সৎকারের জন্য নিজের গ্রামে নিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় ছিল না দরিদ্র দানার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কাকুতি মিনতি করেও কোনো গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেননি তিনি।

অগত্যা উপায়ান্তর না দেখে স্ত্রীর দেহ একটা মাদুরে মুড়ে কাঁধে নিয়ে তিনি রওনা দেন গ্রামের উদ্দেশে। তার সেই পথচলার ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। পেছনে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটতে থাকে তাঁর কিশোরী কন্যা। তবে ৬০ কিমি দূরে অবস্থিত গ্রামের পথ পুরোটা হেঁটে যেতে হয়নি তাঁকে। ১০ কিমি পথ পেরনোর পরেই স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে যায় জেলা প্রশাসন। শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করে তারা।

একজন মানুষের এই চরম সংগ্রামের কাহিনি শুনে বহু মানুষের হৃদয়ই আর্দ্র হয়েছিল। তার পর যা হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ভুলেই গিয়েছে তাকে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্রে জানা গেল, এখন কেমন আছেন তিনি।

ঠিক এক বছর আগে ২৪ অগস্ট মারা গিয়েছিলেন দানা মাঝির স্ত্রী। জানা যাচ্ছে, সেই কপর্দকহীন মানুষটি এক বছরের মধ্যেই হয়ে গিয়েছেন বিরাট ধনী! আজ তার ব্যাঙ্কে জমা অর্থের পরিমাণ ৩৭ লক্ষ টাকা! তিন মেয়েই ভুবনেশ্বরের স্কুলে ভর্তি হয়েছে।

কী ভাবে ভাগ্য ফিরল হতদরিদ্র মানুষটির? আসলে গত বছরের নিদারুণ ট্র্যাজেডির পরে বহু মানুষ ও সংস্থা এগিয়ে এসেছে তাকে সাহায্য করতে। বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রী একাই ৯ লাখ টাকার চেক দেন তাকে। পান আরো সাহায্য। ওড়িশা সরকার তাকে ইন্দিরা নিবাস যোজনার অধীনে একটি বাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়। মেয়েদের পঠনপাঠনের দায়িত্ব নেয় কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস। মাস দুই হল নতুন করে বিয়েও করেছেন দানা মাঝি।

অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ